পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ৩০২ ] তিনি প্রাতঃকালে নানাস্থান হইতে নানাবিধ পুষ্প চয়ন করিয়া আনিতেন এবং যথাসময়ে পূজার যাবতীয় উপকরণ আয়োজনপূর্বক গৃহের দ্বার রুদ্ধ করিয়া পূজায় উপবেশন করিতেন। এই ব্যক্তি নায়িকাসিদ্ধ ছিলেন। তিনি প্রত্যহ দেব-দাসীকে প্রত্যক্ষ করিয়া পূজা করিতেন। এই কথা ক্রমে প্রচার হইয়া গেল। সকলেই ব্রাহ্মণের অসাধারণ পূজার ভূরি ভূরি প্রশংসা করিতে লাগিল। সাধারণের তাহ দোষ বলা যায় না। কারণ, আমরা কোন ব্যক্তিকে এক ঘণ্ট। পূজা করিতে দেখিলে তাহার সুখ্যাতি করিতে অজ্ঞান হইয়া পড়ি। যে ব্যক্তি ত্রিসন্ধ্যা বা মালা জপ করেন, তিনিও ঋষি তপস্বীবিশেষ বলিয়া সাধারণর চক্ষে প্রতীয়মান হইয়া থাকেন। এ ব্যক্তি তাহাপেক্ষ। উচ্চাবস্থায় আরোহণ করিয়া ছিলেন, সুতরাং তাহার গুণগ্রামে গ্রাম পরিব্যাপ্ত হইয়াছিল। কনিষ্ঠ ভ্রাতা লেখা পড়া শিক্ষা করেন নাই, সুতরাং, বিদায়ের নিমন্ত্রণ হইত ন। এবং ব্রাহ্মণের ঘরে মুখ হইলে অন্ততঃ দশকৰ্ম্মান্বিত হওয়াও কৰ্ত্তব্য, দুর্ভাগ্যবশতঃ তিনি তাহাতেও অশক্ত ছিলেন । গৃহের কার্য্যাদির তার দিলে তাহার সমূহ বিশৃঙ্খলা ঘটাইয়া দিতেন। বাজার করিতে পাঠাইলে টাকা পয়সা বিলাইয়া দিয়া আসিতেন । ঘরের কোন দ্রব্যাদি তাহার চক্ষে পড়িলে, তিনি তৎক্ষণাৎ তাহ। আর একজনকে না দিয়া নিশ্চিস্ত থাকিতে পারিতেন না । ভোজন করিতে দিলে, তিনি অপেক্ষ। করিয়া অতিথি না আসিলে তবে আপনি ভোজন করিতেন। আচার বিচারের কোন সংস্রব রাখিতেন না । কখন স্নানাদি করিতেন, কখন বস্ত্র ত্যাগ করিতেন, কখন মুখ ব্ৰক্ষালন করিতেন এবং কখন তাহা করিতেন না। কখন প্রাতঃকালেই বালকদিগের সহিত জলপান ভক্ষণ করিতেন এবং কখন তিন দিনের পরেও কেহ কিছুই খাওয়াইতে পারিত না । তাহাকে কেহ নিমন্ত্রণ করিলে কখন একত্রে বসাইয়।