পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 8७ ] হরিনাম সাধনাও কাল ধৰ্ম্ম হইতে পারে না । সাধন ভিন্ন কোন কাৰ্য্য হয় না, এ কথ। আর অধিক বলিবার প্রয়োজন নাই। কারণ, র্যাহার হরি বা অন্য দেবদেবীর নাম অবলম্বন করিয়া সংসারে অবস্থিতি করিতেছেন, আমি তাহাদের জিজ্ঞাসা করিতেছি, তাহার। আপনার অন্তঃপুরে গমনপূৰ্ব্বক মনকে জিজ্ঞাসা করিয়া দেখুন দেখি, যে আনন্দলাভ দূরে থাকুক, তিনি কালভয় হইতে পরিত্রাণ পাইয়াছেন কি না ? যিনি নাম সাধনাম্বারা এই দুইটা ভাব লাভ করিয়াছেন, তিনিই নামের ফল পাইয়াছেন, তাহারই প্রকৃত সাধন হইয়াছে । কালভয় হইতে পরিত্রাণ এবং ঈদয়ে নিরবচ্ছিন্ন শাস্তিই ঈশ্বর সাধনার প্রথম ফল । তাহার দর্শনাদি অনেক দূরের কথা । শাস্তি ব্যতীত আমরা একমুহূৰ্ত্ত স্থির হইতে পারি না। সংসারে যতক্ষণ বিভীষিক উত্থিত না হয়, ততক্ষণ একপ্রকারে কাটিয়া যাইতে পারে, কিন্তু যে সময়ে বিভীষিকা আসিয়া উপস্থিত হয়, তখন অ}র কে সে বিপদ হইতে উদ্ধার করিতে পারে ? যখন প্রাণের পুত্তলিকা বিসজ্জন দিতে হয়, যখন স্ত্রীকে দেহ, মন এবং প্রাণ দ্বিখণ্ড করিয়া জন্মের মত বিদায় দিতে হয়, যখন আপনার পরম সাধের দেহকে পরিত্যাগ করিতে হয়, তখন মনের অবস্থা কি প্রকার হয় ? পুত্র মরিতেছে, মরিয়া যাক, একথা কে বলিতে পারেন ? স্ত্রী-বিয়োগ হইতেছে দেখিয়া কে আনন্দিত হইতে পারেন ? যখন আসন্নকাল উপস্থিত হয়, যখন পরিজনের। হতাশ হইয়া কি করিবে ভাবিয়া কুল কিনারা দেখিতে ন পায়, যখন চিকিৎসক দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া হেট মস্তকে চিন্তিত হয়, তখন সেই ব্যক্তির মন কোথায় যাইয়া আশ্রয় লয় ? একবার স্ত্রীর মুখের দিকে চাহিয়া মনে করে যে, এই অবলাকে কোথায় কাহার কাছে রাখিয়া চলিলাম ! এ কোথায় যাইবে ! কে আর আমার মত ভালবাসিবে !