পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 8૧ ] উহার ব্যথায় কে ব্যথিত হইবে ! ইত্যাকার ভাবনায় হৃদয়কন্দর পরিপূর্ণ হইয়া অশ্রু বিসর্জন করিতে থাকে। পুত্র কন্যাদির মুখের দিকে চাহিবার শক্তি থাকে না । তাহদের কথা স্মরণ হইলে একেবারে ব্যাকুল হইয় উঠে। নিজের পরিণাম চিন্তার কুল কিনারা থাকে না। কোথায় যাইব ? কি হইবে ? কে আশ্রয় দিবে ? এই ভাবিয়া দশদিক অন্ধকার দেখে । তখন কামিনীকাঞ্চন আর শান্তি বিধান করিতে পারে না । তখন সাধন বিহীন শাস্ত্রাদির জ্ঞানও কোন সহায়তা করিতে পারে না । কিন্তু যাহার সাধন করা আছে, সেই সাধু সেই সময়ে-- সেই পরম সময়ে—সাধন লব্ধ বস্তু পরমেশ্বরের অভয়বাণী প্রাণের ভিতরে শ্রবণ করিয়া থাকেন। তিনি সেই নিদান কালে মধুর স্বরে বলেন, “ভয় কি বা বা ! ভয় কি মা ? এই যে আমি তোর পরিত্রাতা আছি—এই যে আমি তোর আশ্রয়দাতা আছি—এই যে আমি তোর ভব জলধি পার করিবার কর্ণধার রূপে অপেক্ষ করিতেছি ।” তাহার সকল ভাবনা দূর হয়, সকল চিন্ত কাটিয়া যায়। সে স্ত্রীপুত্রাদিকে সে সময়ে বীর দৰ্পে বলিতে পারে যে, “ছার মৃন্ময় পুতুলের ভরসা পরিত্যাগপূৰ্ব্বক নিত্যপুরুষের পদাশ্রয় গ্রহণ কর, ইহপরকালের আশ্রয় পাইবে।” তখন সেই মুমুৰু ব্যক্তি কামিনীকাঞ্চনের বন্ধন ছিন্ন করিয়া প্রাণ ভরিয়া অনাথনাথ দীনবন্ধুকে স্মরণ করিতে করিতে দেহ বাস ত্যাগ করিতে পারে । যাহার সাধন নাই, তাহার ধারণাও নাই, সুতরাং সে সময়ে তাহ কখন স্মরণ হইতে পারে না । সময়ে স্মরণ হইবে বলিয়া নানাবিষয় আমরা ধারণা করিয়া রাখি, এ প্রকার ধারণা সাধনা ব্যতীত কখন হয় না । ঈশ্বর সাধনা না করিলে তাহা স্মরণ হইতে পারে না। এইজন্য ঈশ্বর সাধনা ব্যতীত ঈশ্বরের বিষয় কখন মনের অধিকারভুক্ত হইতে