পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাষণ্ডপীড়ন 89 অর্থাৎ আমি ব্ৰহ্ম এইরূপ নিশ্চলমতি হইয়া স্থির হইবার যোগ্য হয়েন। অতএব এই সকল দৃঢ়তর শাস্ত্ৰপ্ৰমাণের অনুসারে কলির জ্ঞানী মহাশয়েরা ভাক্ত, কি অভাক্ত হয়েন ? অপক্ষপাতী মহাশয়দিগের কি বোধ হয় ? ভাক্তই বোধ হইবেক, যেহেতু তাহারা আপনারদিগের [ ৬৬ ] না। অধিকারাবস্থা, না। সাধনাবস্থা, না সিদ্ধাবস্থা, এক অবস্থাও স্বীকার করিতে পারিবেন না, এ কি দুরবস্থা, যদ্যপি পরমেশ্বরকে সাক্ষী করা, এই এক প্রকার প্রতারণার উপায় তাহারদিগের আছে, তাহাতেই প্রথমাবস্থায় অবােধ লোকদিগের নয়নে ধূলি প্ৰক্ষেপ করেন, তথাপি অপক্ষপাতী সুবোধ লোকদিগের নিকটে কিরূপে প্রতারণা করিবেন, পূর্বেও শ্ৰীগুরুগোপেশ্বর প্রভৃতি অনেক প্ৰতারক ছিল, তাহারদিগের প্রতারণাই বা কোন সুবোধ লোকদিগের অবোধ হইয়াছিল, তাহারদিগের নিকটে এহার কোন কীটস্য কীট হইবেন এবং লাজায় জলাঞ্জলি প্ৰদান না করিলেই বা সাধনাবস্থার স্বীকার কিরূপে করিবেন, যদ্যপি অপক্ষপাতী মহাশয়েরা ‘ কাহেন যে, তাহারা কি আজি: লজ্জাকে জলাঞ্জলি দিয়াছেন, না। অনেক কাল দিয়াছেন, তথাপি সিদ্ধাবস্থায় মুনি শব্দ শ্রবণে অবশ্যই মৌনী হইবেন, কিন্তু তাহাতে অপক্ষপাতী মহাশয়েরা মৌনং সন্মতিলক্ষণং, এই বচন দৃষ্টি ৬৭ তে সিদ্ধাবস্থায় তাহারদিগের স্বীকার করা বোধ করিবেন না, যেহেতু অজপালকে তুরঙ্গবলের আধিপত্য কদাচ সম্ভব হয় না, তবে যে র্তাহারা ব্ৰহ্মত্বপ্রাপ্তিস্বরূপ অত্যুচ্চ ফলের গ্রহণেচ্ছায় অতি সুগম বোধে পুনঃ পুনঃ হস্তোত্তোলন করেন তাহাতে কেবল হাস্যাস্পদ হওয়া এবং উভয়ভ্রষ্টতার দৃঢ়তা করা বিনা কি বোধ হইতে পারে ? তাক্ততত্ত্বজ্ঞানীর উত্তর।— কোন এক বৈষ্ণব যে আপন• • • নিন্দিত করিয়া জানিবেন कि न ? - [৬৮] ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাঙক্ষীর প্রত্যুত্তর -প্রথমতঃ ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাঙ্ক্ষীদিগের পূর্বোক্ত লিখনানুসারে ভাক্ত বৈষ্ণব ও ভাক্ত শাক্ত খপুষ্পের ন্যায় অলীক ; দ্বিতীয়তঃ কি বৈষ্ণব, কি শাক্ত, যে কোন উপাসক। যদি নানা বেশধারী নাটের ন্যায় ও মায়াবী রাক্ষসের ন্যায় কোন ব্যক্তিকে কখন বামাচারী, কখন ভোগী, কখন যোগী, কখন বা ব্ৰহ্মজ্ঞানী দেখিয়া অঙ্কুশাঘাতের দ্বারা মত্ত হস্তিমূর্থের দৰ্পশান্তির ন্যায়, দুৰ্জনের দৌৰ্জন্য শান্তির নিমিত্ত প্রিয় বচনের দ্বারা উপদেশ না করিয়া অপ্রিয় ভয়প্রদর্শন বচনের দ্বারা উপদেশ করেন এবং স্ব স্ব শক্তির অনুসারে স্ব স্ব ধৰ্ম্মানুষ্ঠানেও রত থাকেন, তবে সেই বৈষ্ণব আদি উপাসকেরা যথার্থ বৈষ্ণবাদি এবং ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজক্ষী ও সর্বজনহিতৈষী না হইয়া ভাক্তবৈষ্ণবাদি ও নিন্দকের মধ্যে অতিশয় নিন্দিত কিরূপে হয়েন ? এবং যেমন কলির জ্ঞানী মহাশয়ের যথার্থ তত্ত্বজ্ঞানী না হইয়া আপনার দিগকে যথার্থ তত্ত্ব৬ি৯]ঞ্জানী করিয়া মানেন, তেমন বৈষ্ণবাদি উপাসকেরা, ভাক্ত বৈষ্ণবাদি না হইয়া আপনারদিগকে ভাক্ত বৈষ্ণবাদি কিরূপে মানিতে পারেন ? এবং অভাক্ত উপাসকদিগের অভিমান করা সৰ্ব্বথা অসম্ভব, যেহেতু ভাক্তাদিগেরই অভিমান অঙ্গের ভূষণ ও জীবনধন এবং যদ্যপি বৈষ্ণবাদি পঞ্চোপাসক আপনার২ উপাসনার সর্ব অনুষ্ঠান করিতে অশক্ত হয়েন, তথাপি পাপক্ষয় ও মোক্ষাপ্রাপ্তি র্তাহারদিগের অনায়াসলভ্য, যেহেতু