পাতা:রাষ্ট্রভাষার প্রথম সোপান.pdf/৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা হিন্দী ভাষা যে উত্তর ভারতের জনগণের ভাষাগত পার্থক্যকে স্বাভাবিক ভাবেই দূর করিতে সমর্থ হইয়াছে, এবং দক্ষিণ-ভারতের তীর্থস্থান ও প্রধান প্রধান নগরে ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে এক হিন্দীই ষে বহুল পরিমাণে প্রচলিত, এ কথ। যিনিই ভারতবর্ষে কিছু পরিমাণও ভ্রমণ করিয়াছেন তিনিই স্বীকার করিবেন । হিন্দী হইতেছে আৰ্য্যাবর্তের অর্থাৎ আর্য্যভাষী উত্তর-ভারতের মধ্যদেশের ভাষা, দিল্লী-মেরঠ (মীরাট) অঞ্চলের ভাষা । স্মরণাতীত কাল হইতে এই মধ্য-দেশের ভাষা লৌকিক সংস্কৃত রূপে, শৌরসেনী প্রাকৃত রূপে, পালি রূপে (পালি যে মগধের ভাষা নয়, মধ্যদেশের ভাষা, এই মতবাদ এখন সাধারণতয়া গৃহীত হইতেছে ), শৌরসেনী অপভ্রংশ রূপে, ও পরে মুসলমান আমলে ব্রজভাষা রূপে ও খড়ী বোলী বা হিন্দুস্থানী রূপে, সমগ্র আর্য্যভাষী জনগণের মধ্যে আন্তঃপ্রাদেশিক ভাষা রূপে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া গৃহীত হইয়া আসিয়োছে। হিন্দীর এই নিখিল ভারতব্যাপী প্রতিষ্ঠা আজকালকার ব্যাপার নহে। প্রাচীণ সংস্কৃতের পরে, আধুনিক ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে মাত্র হিন্দীই অখণ্ড ভারতের ঐক্যের প্রতীক স্থানীয় ভাষা । এই কথাটী, ব্রিটিশ আমলে আমাদের দেশে জাতীয় আন্দোলনের সুত্রপাত হইতে আমাদের এই বাঙ্গলা দেশেরই মনস্বী চিন্ত৷ নেতারা বুঝিতে পারিয়াছিলেন ; সেইজন্ত ১৮৭৫ খৃষ্টাব্দে ব্ৰহ্মানন্দ কেশব চন্দ্র সেন এবং ৮৮৫ খৃষ্টাব্দে মনীষী ভূদেব মুখোপাধ্যায় নিখিল ভারতের ঐক্যবিধায়িনী ভাষারূপে হিন্দীরই আবাহন করিয়াছিলেন ১৯০৫ সালে দূরদর্শী কালীপ্রসন্ন কাব্যবিশারদ বঙ্গ ভঙ্গ আন্দোলন ও স্বদেশীর যুগে, হিন্দীতেই জাতীয় সঙ্গীত “ভৈয়া দেশ কী য়হ ক্যা হাল”