অব্যাহত গতি; সুতরাং তিনি যেমন উপার্জ্জনের সুযোগ পাইবেন, অন্যে সেরূপ পাইবে না।”
আমেলিয়া অবজ্ঞাপূর্ণ দৃষ্টিতে রাইমারের দিকে চাহিয়া দৃঢ় স্বরে বলিলেন,“যুবতী যদি সাধারণ রমণী হইত,তাহা হইলে সে, এই যুবকের হাতে ধরা পড়িয়া বিহ্বল হইত, কিংকর্ত্তব্য-বিমূঢ় হইয়া হারছড়াটির আশা ত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইত, কিন্তু যুবতী সেই যুবকের মত শত শত চতুর যুবককে অঙ্গুলি সঙ্কেতে ইচ্ছামত পরিচালিত করিত, এখনও করিয়া থাকে। শীঘ্র আমার পাখা দাও,নতুবা এখনই তোমার মৃত দেহ ভূমিতলে লুটাইবে, জানিও।”—আমেলিয়া তৎক্ষণাৎ তাঁহার পকেট হইতে টোটাভরা একটি ক্ষুদ্র পিস্তল রাহির করিয়া রাইমারের ললাটে তাহা উদ্যত করিলেন।
রাইমার মুহূর্ত্তকাল কিংকর্তব্য-বিমূঢ় ভাবে বসিয়া রহিল, তাহার মুখ শুকাইয়া গেল। কিন্তু মুহূর্ত্ত মধ্যে সে আত্মসংবরণে সমর্থ হইল, হাসিয়া বলিল, “সুন্দরী, আমাকে ভয় প্রদর্শন বৃথা! আপনি আমাকে গুলি করিতে সাহস করিবেন না, আপনার পিস্তলেয় শব্দ হইলেই নাচ-ঘর হইতে অনেকে এখানে ছুটিয়া আসিবে। নরহত্যা করিয়া সম্রান্তবংশীয়া সুন্দরীরও কঠোর রাজদণ্ড হইতে মুক্তি লাভের আশা নাই। হারের মূল্য অপেক্ষা আপনার জীবনের মূল্য অনেক অধিক।”
আমেলিয়া, বলিলেন, “মিথ্যা আশায় প্রলুব্ধ হইও না, আমি তোমাকে বৃথা ভয় প্রদর্শন করি নাই। আমার এই পিস্তলের টোটা আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে নির্ন্মিত। এই টোটায় যে বারুদ আছে তাহা নির্ধ্বূম; পিস্তল আওয়াজ করিলে যে শব্দ হইবে, তাহা দুই হাত দূরের লোকেরও কর্ণে প্রবেশ করিবে না।—শীঘ্র আমার পাখা দাও।”