পাতা:লণ্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লণ্ডনে বিবেকানন্দ ইহা ঠিক বিপরীত। আহারের থালাটা সম্মুখে নীচু করে ও পেছন দিকটা উচু করে, কিন্তু এ দেশ ঠিক ইহার বিপরীত। তাহার পর কোন্ হাতে কাটা চাচে ধরিতে হয়—সে এক বড় সমস্যা। স্বামীজী অলক্ষিতভাবে সারদানন্দ স্বামীর পা চাপিয়া দিয়া বলিলেন, “ওরে ডাহাতে ধ’তে নেই, ডান হাতে ছুরি ধরিতে হয়, আর বাঁ হাতে কাটা দিয়ে মুখে তুলতে হয়। অত বড় বড় গরস্ করে না, ছােট ঘােট গরস্ করবি। খাবার সময় দাত জিভ বার করূতে নেই, কখন কাসবি না, ধীরে ধীরে চিবুবি। খাবার সময় বিষম খাওয়া বড় দূষণীয়, আর নাক ফোঁস ফোঁস কখনও করবে না।” এ সব হচ্ছে তালিম প্যারেড, যেন থিয়েটারে প্রম্পটিং করা হচ্ছে। যাহ। হউক, নুন দিয়া দুধ খাইয়া সারদানন্দ স্বামীর গা বমি বমি করিতে সুরু করিল, আর কিছুই খাইতে পারিলেন না, কোন রকম করিয়া খাওয়া সাঙ্গ করিতে পারিলে যেন তিনি বাচেন! অবশেষে খাওয়া সাঙ্গ করিয়া মিস মুলারের বৈঠকখানা ঘরে আসিয়া সারদানন্দ স্বামী বৰ্তমান লেখককে বলিলেন, 'না বাবা, অমন আটে-কাটে বেধে আমি লেক্চার কন্ট্রে পাৰ্ব্ব না । ও নরেনের কাজ, নরেন করুক্ গে! কোথায় হাতে করে বড় বড় থাবা করে খাব, না, একটু একটু করে ছুচ বিধে খাওয়া ! আর হ্যাখ দেখি হিন্দুর ছেলে দুধে নুন দিয়ে খাওয়া? আরে খেয়ে আমার পেট গুলিয়ে উঠলাে, কিন্তু ভয়ে বমি কর্তে পাল্লম না । তখন উঠতেও পারিনি, আবার ও জিনিস খেতেও পারি নি। দ্যাখ, ভাই, এ দেশের দুধটা বেশ ঘন আর মােটা ভার মিশেলি পাওয়া যায়, কমলা নেবুও এ দেশে আছে, একদিন ভাল করে চিনি দিয়ে কমলা লেবুর ক্ষীর বা ভারমিশেলির ক্ষীর খাব। জাখ দেখি এমন ঘন দুধ নুন দিয়ে নষ্ট কচ্চে। শুধু ওর খাতিরেই এই যায়গায় পড়ে আছি আর ঐসব জিনিস খেয়ে বেশ আছি”—এইরূপ কথা

অদ্ধ কুঞ্চিত ও অর্ধ ব্যঙ্গচ্ছলে বলিতে লাগিলেন। কিন্তু স্বামীজী যখন

৩৫