পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলে, চাউল আইন বেইচা পারিনা। আর টানতে। আনার খরচ, ঘুষ-মাঝে মাঝে চাউল কাইড়াও লয়। আমারে কইয়া দে-তুই যা করসি। আমিও তাই করুম। সুবালা বলে, তুমি পারব না দিদি, তাছাড়া আমার কামে লাভও বেশী নাই । ইছামতী ধাক চোখে তাকায়।-পারুম না। ক্যান ? লাভ হইব না ক্যান ? বয়স নাই চেহারা নাই বইলা ? সুবালা দুঃখের হাসি হাসে।-দ্য্যাখে না। সারাডা দিন বাইরে কাটাই ? সোয়ামীর ফেইলা পোলাপানগো ফেইলা তুমি পারব ? আমি ভিক্ষা করি, গতর খাটাই, যেমন সুবিধা। তুমি যা নিয়া আছ তাই নিয়া থাক । ডমূরও কৌতুহল প্ৰকাশ করে। বলে, সত্যি, কোথায় যাও, কি কর সারাটা দিন ? আমায় বললে দোষ নেই। মেয়েছেলে বিপাকে পড়েছি, যে ভাবে পার রোজগার করবে-বাছ বিচার থাকলে চলবে কেন ? তুমি বন্দ কাজ কর জানলেও আমি তোমার নিন্দা করব না ভাই। বলে, বে-রোজগেরে পুরুষগুলি পাজীর একশেষ। নইলে এমনভাবে তোমার দায় এডিয়ে পালায় ! সুবালা বলে, সে ক্যান পালাইবো ? পলাইয়া আইছি তো আমি ! কাম নাই উপায় নাই, মাথা গেছে। খারাপ হইয়া-যত চোট আমার উপরে। তুমি তো দিদি সুখেই আছ, সোয়ামী কত খাতির কইরা মন যোগাইয়া চলে। ডুমুর বলে, খেতে পরতে দিচ্ছি, খাতির করবে না, মন যোগাবে না? সুবালা মাথা নাড়ে। আমিও খাওয়াইতাম ভিক্ষা কইরা। জালা --ম্যান বেশি হইত, পুরুষ হইয়া আমার রোজগার খাইব । আরও বেশী ঝাল ঝাড়ত আমার উপরে। 'd OGQ)