পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চেয়ে আধাপেটা খেয়ে প্ৰাণপাত করে না মানুষ একটু সংস্থানের জন্য ? মানুষ ভূত কি না। সুখে থাকতে নিজেকে কিলোবে। ত্যাগ ত্যাগ করে তোমরা সবাইকে সন্ন্যাসী বানাতে চাইছ ! তোমরা !! তাকে “তোমরা’ ছাড়া সম্বোধন করতে নলিনী ভুলে গেছে। দেশকে ভালবাসে বলে নলিনী বড় শ্রদ্ধা করত তাকে, নিজেকে উজার করে উন্মুখ অতল ভালবাসায় তার জীবন ভরে রাখত। নলিনী ভুলে গেছে আজও সে দেশকে ভালবাসে । কত তাড়াতাড়ি ভুলে গেছে, কত অল্পদিনে ! যুদ্ধ, বোমার ভয়, দুভিক্ষ হাসিমুথে হেলায় পিছনে ঠেলে দিয়েছে, কিসের সমস্যা কিসের কি, তুমি আছ অামি আছি! একটি মেয়েকে জন্ম দিতে সব ভুলে গেছে নলিনী। তবু তাকে এত ভাবে বাচিয়ে চলে কেন নলিনী ? রাত্রে কেন তাকে জানায় না ঘবে চাল নেই, সে না খেয়ে পেটের জ্বালায় জ্বলিতে জ্বলিতে পাশে এসে শুয়েছে ? অাদর করতে চেয়ে কাছে টানায় খান কক্ষণ সে কাঠ হযে শুযেছিল, হাত সরিয়ে দিয়েছিল। কত দুঃখ আর ক্ষোভের সঙ্গে নলিনীকে তখন তার মনে হয়েছিল স্বার্থপর, এখন নিজের সেই জ্বালার কথা ভেবে লােজায় কনাদের মরে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যেতে সাধ যায়। সারাদিন খেটে মেয়েকে মাই খাইয়ে ঘূম পাড়িয়ে নলিনী শুয়েছিল অন্যদিনের মতই, সে টেরও পায়নি যে তার একমুঠো ভাত জোটে নি। তারপর নিজেই নলিনী পাশ ফিরে তার গলা জড়িয়েছিল। এটাও তার নলিনীর স্বার্থপরতাই মনে হয়েছিল। সকালে এখন আকাশে সুৰ্য্য উঠেছে, নোংরা রাস্তায় মানুষের ঠাসাঠাসি ভিড, বাজারে তার পাশে দাড়িয়ে নলিনীর মতই রোগ ফোলা চোখ মুখ, আলুথালু কুৎসিত শিথিল ভঙ্গিতে শাড়ি জড়ান বস্তির একটি সস্তা বেশ্য অ্যাধপোয়। কুচোঁ চিংড়ি কিনছে । ভগবান আছেন SS ግ