পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাইনে নিয়ে ছোট্ট সুটকেশ আর বিছানার বাণ্ডিল হাতে জীবন রাস্তায় বেরিয়ে যায় । কোথায় যাবে ঠিক নেই, আরেকটা চাকরী জুটিয়ে নিতে কতকাল লাগবে জানা নেই, কিন্তু রাস্তায় নেমে দাড়িয়ে জীবন মনে প্ৰাণে একটা অদ্ভুত রকম স্বস্তি অনুভব করে। ভিতরে একটা বিশ্ৰী কষ্টকর চাপ যেন হঠাৎ কমে গেছে, একেবারে হাস্কা হয়ে গেছে দেহ,মন । এত স্পষ্ট হয় অস্বস্তি কেটে গিয়ে স্বস্তি বোধ, করাটা একটা দুঃসহ বন্ধন থেকে মুক্তিলাভের আনন্দ যে জীবন সত্যই আশ্চৰ্য্য হয়ে যায়। একটা সস্তা হোটেলে গিয়ে ওঠে । তক্তপোষে বিছানাটা পেতে ঠিকঠাক করে নিতে নিতে ওই আরামটাই যেন গাঢ় ঘুম হয়ে তার চোখে ঘনিয়ে আসে । বিছানায় শোয়ামাত্ৰ গভীর ঘুমে সে অচেতন হয়ে যায়। সন্ধ্যাবেলা ঘুম ভাঙ্গতে মনে হয় শুধু স্বস্তি নয়, একবেলা ঘুমিয়ে শরীর মন যেন আশ্চৰ্য্যরকম তাজা হয়ে উঠেছে। পরদিন সে কুমুদের কাছে যায়। বলে, ডাক্তারবাবু, আপনি ঠিক বলেছিলেন। আপনাদের কি ভুল হতে পারে । আমি সত্যি একটা মস্ত পাপ করছিলাম। কিন্তু নিজেকে অন্যরকম বুঝিয়েছিলাম বলে ধরতে পারি নি পাপ করছি। কুমুদ বলে, এখন ধরতে পেরেছ ? জীবন সায় দেয় । --পেরেছি বৈকি। প্ৰায় চার বছর ধরে আমি একটা মহাপাপী বদলোকের কাছে চাকরী করছিলাম। প্ৰথমে তবু পদে ছিল, তারপর কত রকম অকাজ কুকুৰাজ যে করেছে, কত লোকের ঘাড় যে ভেঙ্গেছে ! বাড়ীর ছেলেমেয়েগুলি পৰ্য্যন্ত ক্ৰমে ক্রমে বজাত a 9