পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেঘদূত
১৩

 পৃথিবী বল্‌লে, “সে কেমন করে হবে? তুমি যে অসীম, আমি যে ছোট।”

 আকাশ বল্‌লে, “আমি তো চারদিকে আমার মেঘের সীমা টেনে দিয়েছি।”

 পৃথিবী বল্‌লে, “তোমার যে কত জ্যোতিষ্কের সম্পদ, আমার ত আলোর সম্পদ নেই।”

 আকাশ বললে, “আজ আমি আমার চন্দ্র সূর্য্য তারা সব হারিয়ে ফেলে এসেচি, আজ আমার একমাত্র তুমি আছ।”

 পৃথিবী বল্‌লে, “আমার অশ্রুভরা হৃদয় হাওয়ায় হাওয়ায় চঞ্চল হয়ে কাঁপে, তুমি যে অবিচলিত।”

 আকাশ বল্‌লে, “আমার অশ্রুও আজ চঞ্চল হয়েচে, দেখ্‌তে কি পাও নি? আমার বক্ষ আজ শ্যামল হ’ল তোমার ঐ শ্যামল হৃদয়টির মত।”

 সে এই বলে’ আকাশ-পৃথিবীর মাঝখানকার চিরবিরহটাকে চোখের জলের গান দিয়ে ভরিয়ে দিলে।

 সেই আকাশ-পৃথিবীর বিবাহ-মন্ত্র-গুঞ্জন নিয়ে নববর্ষা নামুক আমাদের বিচ্ছেদের পরে। প্রিয়ার মধ্যে যা অনির্ব্বচনীয় তাই হঠাৎ-বেজে-ওঠা বীণার তারের মত