বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজপুত্তুর
৬৫

গরীব, অপাত্রে মেয়ের বিয়ে দিতে চাইল না, মেয়ের বয়স গেল বেড়ে, সকলে নিন্দে করলে।

 বাপ গেচে মরে, এখন মেয়ে এসেচে খুড়োর বাড়ীতে।

 পাত্রের সন্ধান মিল্‌ল। তার টাকাও বিস্তর, বয়সও বিস্তর, আর নাতি নাৎনীর সংখ্যাও অল্প নয়। তার দাব-রাবের সীমা ছিল না।

 খুড়ো বললেন, মেয়ের কপাল ভাল।

 এমন সময় গায়ে-হলুদের দিনে মেয়েটিকে দেখা গেল না, আর পাশের বাসার সেই ছেলেটিকে।

 খবর এল, তারা লুকিয়ে বিবাহ করেচে। তাদের জাতের মিল ছিল না, ছিল কেবল মনের মিল। সকলেই নিন্দে করলে।

 লক্ষপতি তাঁর ইষ্টদেবতার কাছে সোনার সিংহাসন মানৎ করে বল্লেন, “এ ছেলেকে কে বাঁচায়!”

 ছেলেটিকে আদালতে দাঁড় করিয়ে বিচক্ষণ সব উকীল, প্রবীণ সব সাক্ষী দেবতার কৃপায় দিনকে রাত করে তুললে। সে বড়ো আশ্চর্য্য।

 সেই দিন ইষ্টদেবতার কাছে জোড়া পাঁটা কাটা পড়ল, ঢাক ঢোল বাজ্‌ল, সকলেই খুসি হল। বল্‌লে, কলিকাল বটে, কিন্তু ধর্ম্ম এখনো জেগে আছেন।