পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
শকুন্তলা

অনসূয়া কহিলেন মহারাজ! শুনিতে পাই রাজাদিগের অনেক মহিষী থাকে; কিন্তু সকলেই প্রেয়সী হয় না। অতএব আমরা যেন সখীর নিমিত্ত অবশেষে মনোদুঃখ না পাই। রাজা কহিলেন, যথার্থ বটে রাজাদিগের অনেক মহিলা থাকে; কিন্তু আমি অকপট হৃদয়ে কহিতেছি তোমাদের সখীই আমার জীবন সর্ব্বস্ব হইবেন। তখন অনসূয়া ও প্রিয়ংবদ। সাতিশয় হর্ষিত হইয়া কহিলেন মহারাজ! আমরা নিশ্চিন্ত ও চরিতার্থ হইলাম। শকুন্তলা কহিলেন সখি! আমরা মহারাজকে লক্ষ্য করিয়া কত কথা কহিয়াছি; ক্ষমা প্রার্থনা কর। সখীরা হাস্যমুখে কহিলেন, যে কহিয়াছে সেই ক্ষমা প্রার্থনা করিবে অন্যের কি দায়। তখন শকুন্তলা কহিলেন মহারাজ! যদি কিছু কহিয়া থাকি ক্ষমা করবেন। পরোক্ষে কে কি না বলে। রাজা শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিলেন।

 এইরূপ কথোপকথন চলিতেছে এমত সময়ে প্রিয়ংবদা, লতামণ্ডপের বহির্ভাগে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া, কহিলেন অনসূয়ে! মৃগশাবকটী উৎসুক হইয়া ইতস্ততঃ দৃষ্টিপাত করিতেছে; বোধ করি আপন জননীকে অন্বেষণ করিতেছে। অতএব আমি উহার মার কাছে দিয়া আসি।