পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
শকুন্তলা।

পিতা আদেশ করিয়াছেন, বলিয়াই, জলসেচন করিতে অসিয়াছি এমন নয়, আমারও ইহাদের উপর সহোদরস্নেহ আছে। প্রিয়ংবদা কহিলেন, সখি শকুন্তলে! গ্রীষ্মকালে যে সকল বৃক্ষের কুসুম হয়, তাহাদের সেচন সমাপ্ত হইল; এক্ষণে, যাহাদের কুসুমের সময় অতীত হইয়াছে, এস, তাহাদিগকেও সেচন করি। এই বলিয়া, সকলে মিলিয়া সেই সমস্ত বৃক্ষে জলসেচন করিতে লাগিলেন।

 রাজা দেখিয়া শুনিয়া, প্রীত ও চমৎকৃত হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, এই সেই কণ্বতনয়া শকুন্তলা! মহর্ষি অতি অবিবেচক, এমন শরীরে কেমন করিয়া বল্কল পরাইয়াছেন। অথবা, যেমন প্রফুল্ল কমল শৈবালযোগেও বিলক্ষণ শোভা পায়, যেমন পূর্ণ শশধর কলঙ্কসম্পর্কেও সাতিশয় শোভমান হয়; সেইরূপ এই সর্ব্বাঙ্গসুন্দরী, বল্কল পরিধান করিয়াও, যার পর নাই মনোহারিণী হইয়াছেন। যাহাদের আকার স্বভাবসুন্দর, তাহাদের কি না অলঙ্কারের কার্য্য করে।

 শকুন্তলা জলসেচন করিতে করিতে, সম্মুখে দৃষ্টিপাতপূর্ব্বক, সখীদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, সখি! দেখ দেখ, সমীরণ ভরে সহকারতরুর নব পল্লব পরিচালিত হইতেছে; বোধ হইতেছে যেন সহকার অঙ্গুলিসঙ্কেত দ্বারা আমাকে আহ্বান করিতেছে। অতএব, আমি উহার নিকটে চলিলাম। এই বলিয়া, তিনি