পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১৫

 এই বলিয়া, শকুন্তলা মাধবীলতায় জলসেচন আরম্ভ করিলেন। এক মধুকর মাধবীলতার অভিনব মুকুলে মধুপান করিতেছিল; জলসেক করিবামাত্র, মাধবীলতা পরিত্যাগ করিয়া, বিকসিতকুসুমভ্রমে, শকুন্তলার প্রফুল্ল মুখকমলে উপবিষ্ট হইবার উপক্রম করিল। শকুন্তলা করপল্লবসঞ্চালন দ্বারা নিবারণ করিতে লাগিলেন। দুর্বৃত্ত মধুকর তথাপি নিবৃত্ত হইল না, গুন্ গুন্ করিয়া অধরসমীপে পরিভ্রমণ করিতে লাগিল। তখন, শকুন্তলা একান্ত অধীরা হইয়া কহিতে লাগিলেন, সখি! পরিত্রাণ কর, দুর্বৃত্ত মধুকর আমায় নিতান্ত ব্যাকুল করিয়াছে; তখন, উভয়ে হাসিতে হাসিতে কহিলেন, সখি! আমাদের পরিত্রাণ করিবার ক্ষমতা কি; দুষ্মন্তুকে স্মরণ কর; রাজারাই তপোবনের রক্ষণাবেক্ষণ করিয়া থাকেন। ইতিমধ্যে ভ্রমর অত্যন্ত উৎপীড়ন আরম্ভ করাতে, শকুস্তুলা কহিলেন, দেখ, এই দুর্বৃত্ত কোনও মতে নিবৃত্ত হইতেছে না; আমি এখান হইতে যাই। এই বলিয়া, দুই চারি পা গমন করিয়া কহিলেন, কি আপদ্! এখানেও আবার আমার সঙ্গে সঙ্গে আসিতেছে। সখি! পরিত্রাণ কর। তখন তাঁহারা পুনর্বার কহিলেন, প্রিয়সখি! আমাদের পরিত্রাণের ক্ষমতা কি, দুষ্মন্তকে স্মরণ কর, তিনি তোমায় পরিত্রাণ করিবেন।

 রাজা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, ইহাদের সম্মুখে উপস্থিত হইবার এই বিলক্ষণ সুযোগ ঘটিয়াছে। কিন্তু, রাজা