পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
শকুন্তলা।

সুয়া ও প্রিয়ংবদা সাতিশয় প্রীত হইয়া কহিলেন, সখি! সৌভাগ্যক্রমে তুমি অনুরূপ পাত্রেই অনুরাগিণী হইয়াছ; অথবা, মহানদী, সাগর পরিত্যাগ করিয়া, আর কোন জলাশয়ে প্রবেশ করিবেক।

 রাজা শুনিয়া আহ্লাদসাগরে মগ্ন হইয়া কহিতে লাগিলেন, যা শুনিবার তা শুনিলাম; এত দিনের পর আমার তাপিত প্রাণ শীতল হইল।

 শকুন্তলা কহিলেন, সখি! আর আমি যাতনা সহ্য করিতে পারি না, এখন প্রাণবিয়োগ হইলেই পরিত্রাণ হয়। প্রিয়ংবদা, শুনিয়া, সাতিশয় শঙ্কিত হইয়া, শকুন্তলার অগোচরে অনসুয়াকে কহিলেন, সখি! আর ইহাকে সান্ত্বনা করিয়া ক্ষান্ত রাখিবার সময় নাই; আমার মতে আর কালাতিপাত করা কর্ত্তব্য নয়, ত্বরায় কোনও উপায় করা আবশ্যক। তখন অনসুয়া কহিলেন, সখি! যাহাতে অবিলম্বে অথচ গোপনে শকুন্তলার মনোরথ সম্পন্ন হয়, এমন কি উপায় হয়, বল। প্রিয়ংবদা কহিলেন, সখি! গোপনের জন্যেই ভাবনা, অবিলম্বে হওয়া কঠিন নয়। অনসূয়া কহিলেন, কি জন্যে, বল দেখি। প্রিয়ংবদা কহিলেন, কেন তুমি কি দেখ নাই, সেই রাজর্ষিও, শকুন্তলাকে দেখিয়া অবধি দিন দিন দুর্বল ও কৃশ হইতেছেন?

 রাজা শুনিয়া স্বীয় শরীরে দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন,