পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
শকুন্তলা।

অবগত হইয়াও, আপনি এরূপ কহিতেছেন কেন? আপনি কি জানেন না যে, পরিণীতা নারী যদিও অত্যন্ত সাধুশীলা হয়, সে নিয়ত পিতৃকুলবাসিনী হইলে, লোকে নানা কথা কহিয়া থাকে; এই নিমিত্ত, সে পতির অপ্রিয় হইলেও, পিতৃপক্ষ তাহাকে পতিকুলবাসিনী করিতে চাহে।

 রাজা কহিলেন, কই আমি ত ইঁহার পাণিগ্রহণ করি নাই। শকুন্তলা শুনিয়া, বিষাদসাগরে মগ্ন হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, হৃদয়! যে আশঙ্কা করিতেছিলে, তাহাই ঘটিয়াছে। শার্ঙ্গরব, রাজার অস্বীকারশ্রবণে, তদীয় ধূর্ত্ততা আশঙ্কা করিয়া যৎপরোনাস্তি কুপিত হইয়া কহিলেন, মহারাজ! জগদীশ্বর আপনাকে ধর্ম্মসংস্থাপনকার্য্যে নিয়োজিত করিয়াছেন। অন্যে অন্যায় করিলে, আপনি দণ্ডবিধান করিয়া থাকেন। এক্ষণে আপনাকে জিজ্ঞাসা করি, রাজা হইয়া অনুষ্ঠিত কার্য্যের অপলাপে প্রবৃত্ত হইলে, ধর্ম্মদ্রোহী হইতে হয় কি না? রাজা কহিলেন, আপনি আমায় এত অভদ্র স্থির করিতেছেন কেন? শার্ঙ্গরব কহিলেন, মহারাজ! আপনকার অপরাধ নাই, যাহারা ঐশ্বর্য্য মদে মত্ত হয়, তাহাদের এইরূপই স্বভাব ও এইরূপই আচরণ হইয়া থাকে। রাজা কহিলেন, আপনি অন্যায় ভর্ৎসনা করিতেছেন, আমি কোনও ক্রমে এরূপ ভর্ৎসনার যোগ্য নহি।

 এই রূপে রাজাকে অস্বীকারপরায়ণ ও শকুন্তলাকে লজ্জায়