পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন শুনিয়া তিনি কপালে করাঘাত করিলেন । যে মেয়ে এত দুঃসংবাদ শুনিয়াও ঘুমাইতে পারে, অর্থাৎ সে যে সতীশের চেয়ে মনে মনে ওই বঁদেরটায় প্রতি বেশী অল্পরাগী, এ-কথা মনে করিয়া তাহার মেয়ের প্রতি ক্রোধ ও অশ্রদ্ধার অন্ত রছিল না । পরদিন বেলা প্রায় তিনটা বাজে, গেটের থামে সাইকেল কাৎ করিয়া রাখিয়া সতীশ বাহিরের বসিবার ঘরে জাসিয়া প্রবেশ করিল। তাহার শুষ্ক মুখ, এলোমেলো রুক্ষ চুল, উপস্থিত সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করিল। সরোজিনী মুখ তুলি চাছিল, কিন্তু কথা কছিল না। জ্যোতিষ জিজ্ঞাসা করিল, আপনার অস্থখ করেচেন-কি সতীশবাবু ? সতীশ একটু হাসিবার চেষ্টা করিয়া বলিল, মা । কেহই আর কোন কথা কহিল না দেখিয়া সতীশ মনে মনে বিস্থিত হইল। সে ভাবিতে ভাবিতে আসিতেছিল আজ উপস্থিত হওয়ামাত্র অভিযোগ অসুযোগের অস্ত থাকিবে না। ভাই, সে তখন বাড়ির ভিতরের দিকে অগ্রসর হইবার উদ্যোগ করিয়া নিজেই কহিল, কালকের অপরাধের জন্তে আগে মায়ের কাছে মাপ চেয়ে আসি, তার পরে অঙ্ক কাজ । - শশাঙ্ক এতক্ষণ তীব্র-দৃষ্টিতে সতীশের পানে চাহিয়াছিল, সে-ই কথা কহিল। বলিল, মা এখন ঘুমোচ্ছেন, তাকে জাগিয়ে মাপ চাইবার এত তাড়া কি ? একটু বক্ষন, আপনার সঙ্গে কিছু আলোচনা করবার আছে । তাহার কথায় বরণে সতীশ মত্যন্ত আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিল, আমার সঙ্গে জালোচনা ? : শশাঙ্ক কহিল, আজ্ঞে ই, দুর্ভাগ্যক্রমে আছে বৈকি। জ্যোতিষকে দেখাইয়া কহিল, আপনি নিশ্চয় জানেন আমি ওঁর একজন পরম বন্ধু—না না, জ্যোতিষবাবু, আপনি উঠবেন না—ও কী, আপনারই বা পালালে চলবে কেন ? আমার যা নালিশ তা আপনাদের সামনেই করতে চাই । দুজনেই বন্ধন,—বলিয়া সরোজিনীর প্রতি একটা কটাক্ষ করিল। কিন্তু সরোজিনী এমনি ঘাড় ছেট করিয়া রহিল যে, সে ইহার কিছুই দেখিতে পাইল না ! শশাঙ্ক স্বমুখের টেবিলের উপড় একটা চড় মারিয়া বলিল, আমার ছেলেবেল থেকেই এই স্বভাব যে, যাদের ভালবাসি, তাদের সম্বন্ধে কিছুতেই চোখ বুজে উদ্ধালীন থাকতে পারিনে। তাই গতবারে শুনেই মনে মনে বললুম, এ ত ভাল কথা নয়। সতীশবাবুর এই নির্জন-বাসের একটা খবর নেওয়া উচিত। আপনি হয়ত রাগ Ry&