পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেধ প্রশ্ন বলিতে বলিতে নীলিমার হঠাৎ দৃষ্টি পড়িল, চায়ের বাটতে দু-একবার চুমুক দেওয়া ছাড়া কমল কিছুই খায় নাই। ক্ষুঃস্বরে সেই অমুযোগ করিতেই কমল সহান্তে কহিল,এর মধ্যেই ভুলে গেলেন ? 疇 ভুলে গেলাম ? তার মানে ? * তার মানে এই যে, আমার খাওয়ার ব্যাপারটা আপনার মনে নেই। অসময়ে আমি ত কিছু থাইনে। " * এবং সহস্র অনুরোধেওঁ এর ব্যতিক্রম হবার যো নেই—এই কথাটা হরেন্দ্র যোগ করিয়া দিল । 孵 প্রত্যুত্তরে কমল তেমনিই হাসিমুখে বলিল, অর্থাৎ এ একগুঁয়েমির পরিবর্তন নেই। কিন্তু অত দৰ্প করিনে হরেনবাবু, তবে সাধারণতঃ এই নিয়মটাই অভ্যাস হয়ে" গেছে তা মানি । পথে বাহির হইয়া কমল জিজ্ঞাসা করিল, আপনি এখন কোথায় চলেচেন বলুন ত? হরেন্দ্র বলিল, ভয় নেই আপনার বাড়ির মধ্যে ঢুকবো না, কিন্তু যেখান থেকে এনেচি সেখানে পৌঁছে না দিলে অন্যায় হবে। তখন রাত্রি হইয়াছে, পথে লোক-চলাচল বিরল হইয়া আসিতেছে, অকস্মাৎ অতি-ঘনিষ্ঠের ন্যায় কমল তাহার একটা হাত নিজের হাতের মধ্যে টানিয়া লইয়া বলিল, চলুন আমার সঙ্গে।. স্যায়-অন্যায়ের বিচারবোধ আপনার কত স্বগ্ন দাড়িয়েচে তার পরীক্ষণ দেবেন। হরেন্দ্র সঙ্কোচে শশব্যস্ত হইয়া উঠিল। ইহা যে ভাল হইল না, এমন করিয়া পথ চলায় যে বিপদ আছে এবং পরিচিত কেহ কোথা হইতে সম্মুখে আসিয়া পড়িলে লজ্জার একশেষ হইবে হরেন্দ্র তাহা স্পষ্ট দেখিতে লাগিল, কিন্তু না বলিয়া হাত ছাড়াইয়া লওয়ার অশোভন রূঢ়তাকেও সে মনে স্থান দিতে পারিল না। ব্যাপারটা বিশ্ৰী ঠেকিল এবং এই সঙ্কটাপন্ন অবস্থা মানিয়া লইয়াই সে তাহার বাসার দরজায় আসিয়া পৌছিল। বিদায় লইতে চাহিলে কমল কহিল, এত তাড়াতাড়ি কিসের? আশ্রমে অজিতবাবু ছাড়া ত কেউ নেই। হরেজ কহিল, না। আজ তিনিও নেই, সকালের গাড়ীতে দিল্লী গেছেন, সম্ভবতঃ কাল ফিরবেন। কমল জিজ্ঞাসা করিল, গিয়ে থাবেন কি ? আশ্রমে পাচক রাখবার ত ব্যবস্থা নেই। XSS