পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( 은 তিনি ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া কহিলেন, কি জানি সে কোথা থেকে এ ধারণা পেলে, কিন্তু হঠাৎ শুনলে ভারি বিস্ময় লাগে । মনোরম বলিয়া উঠিল, বিস্ময় লাগে ! সৰ্ব্বশরীরে জাল ধরে না ? বাবা, কখনো কোনো কথাই কি তুমি জোর করে বলতে পারবে না ? যে যা বলবে তাতেই ই দেবে ? আশুবাবু বলিলেন, হুঁ ত দিইনি মা । কিন্তু বিরাগ-বিদ্বেষ নিয়ে বিচার করতে গেলে কেবল এক পক্ষই ঠকে না, অন্য পক্ষও ঠকে। যে-সব কথা তার মুখে আমরা গুজে দিতে চাই, ঠিক সেই কথাই কমল বলেনি। সে যা বললে তার মোট কথাটা বোধ হয় এই যে, সুদীর্ঘ সংসারে যে তত্ত্বকে আমরা রক্তের মধ্যে সত্য বলে পেয়েচি, সে শুধু প্রশ্নের একটা দিক। অপর দিকও আছে। কেবল চোখ বুজে মাথা নাড়ালেই হবে কেন মণি ? মনোরম বলিল, বাবা, ভারতবর্ষে এতকাল ধরে কি সে দিকটা দেখবার লোক ছিল না ? তাহার পিতা একটুখানি হাসিয়া কহিলেন, এ অত্যন্ত রাগের কথা মা । নইলে এ তুমি নিজেই ভাল করে জান যে, শুধু কেবল আমাদের দেশেই নয়, কোনো দেশেই মানুষের পূৰ্ব্বগামীর শেষ প্রশ্নের জবাব দিয়ে গেছেন এমন হতেই পারে না। তা হলে স্বষ্টি থেমে যেতো। এর চলার আর কোন অর্থ থাকতে না । হঠাৎ তাহার চোখে পড়িল অজিত একদৃষ্টে চাহিয়া আছে। বলিলেন, তুমি বোধ করি কিছুই বুঝতে পারচো না, না ? অজিত ঘাড় নাড়িল। আপ্তবাবু ঘটনাটা আমুপূর্বক বিবৃত করিয়া কহিলেন, অক্ষয় কি যে পবিত্র হোম-কুণ্ডের আগুন জেলে দিলেন, লোকে চেয়ে দেখবে কি, ধুয়ার জালায় চোখ তুলতেই পারলে না। অথচ মজা এই যে, আমাদের মামলা হ’লো শিবনাথের বিরুদ্ধে, আর দণ্ড দিলাম কমলকে। তিনি ছিলেন এখানকার একজন অধ্যাপক, মদ খাবার অপরাধে গেল তার চাকরি, রুগ্ন স্ত্রীকে ত্যাগ করে ঘরে আনলেন কমলকে। বললেন, বিবাহ হয়েছে শৈব-মতে—অক্ষয়বাবু ভিতরে ভিতরে সংবাদ আনিয়ে জানলেন, সব ফাকি । জিজ্ঞেস করা হ’লো, মেয়েটি কি ভদ্র-ঘরের ? শিবনাথ বললেন, সে তাদের বাড়ির দাসীর কন্যা। প্রশ্ন করা হলো, মেয়েটি কি শিক্ষিতা ? শিবনাথ জবাব দিলেন, শিক্ষার জন্য বিবাহ করেননি, করেচেন রূপের জন্ত। শোন কথা । কমলের অপরাধ আমি কোথাও খুজে পাইনি, অথচ তাকেই দূর করে দিলাম আমরা সকল সংসর্গ থেকে। আমাদের ঘৃণাটা পড়লো গিয়ে তার পরেই সবচেয়ে বেশি। আর এই হ’লে সমাজের স্ববিচার 8సి