শান্তিনিকেতন তিনি সম্পূর্ণ হয়ে আছেন। একটি অলক্ষ্য উপাসনার দ্বারা ভিতরে ভিতরে সর্বদাই তাকে স্বান করিয়ে দিচ্ছে—পরম পবিত্রস্বরূপ স্বামীকে তিনি তার আত্মার মধ্যে বরণ করে নিয়েছেন, এইজন্য স্বনির্মল শান্তিময় শুচিতায় তার সমস্ত জীবন দীপ্যমান হয়ে উঠেছে। সত্য র্ত্যকে পবিত্র করে তুলেছে, বাইরের কোনো নিয়ম নয়। আমরা যখন কেবল নিজেরটি নিয়েই থাকি তখন আমরা আমাদের বড়ো আত্মাটির প্রতি বিমুখ হই ; তাতে কেবলই আমাদের সত্যহানি হতে থাকে বলেই তার দ্বারা আমাদের বিকৃতি ঘটে। তাই স্বার্থের জীবন ভোগের জীবন কেবলই মলিনতা দিয়ে আমাদের লিপ্ত করতে থাকে— এই গ্লানি থেকে ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করুন— তিনি আমাদের বাচান । আমার নিজের সেবা আমার পক্ষে বড়ো লজ্জা, আমার স্বামীর সেবাতেই আমার গৌরব। আমার নিজের সুখের দিকেই যখন আমি নেমে পড়ি তখন আমার বড়ো আমিকে একেবারেই অস্বীকার করি বলেই ভয়ানক ছোটো হয়ে যেতে থাকি ; সেই ছোটো আপনাকে ভরতে গিয়েই আপনাকে যথার্থ ভাবে হারাতে থাকি । মানুষ যে ছোটো নয়, মানুষ যে সেই বড়োর যোগে বড়ো । সেই তার বড়োর আনন্দেই সে আনন্দিত হোক, সেই তার বড়োর সম্বন্ধেই সে জগতের সকলকে আপনার করে নিক। সেই তার বড়ো আপনাকে হারিয়ে সে বঁাচবে কেমন করে! আর-কিছুতেই বঁাচতে পারবে না, ধন মান খ্যাতি কিছুতেই না। সত্য না হলে বাচব কী করে ? আমি কি আপনাকে দিয়ে আপনাকে পূর্ণ করে তুলতে পারি ! হে আমার পরম সত্য, আমি আমার অস্তরে বাহিরে কেবল নিজেকেই আশ্রয় করতে চাচ্ছি বলে কেবল অসত্যের মধ্যে অশুচি ՀԵ.e
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯১
অবয়ব