বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন কিন্তু শ্রদ্ধা দিচ্ছে না— এবং শ্রদ্ধয়া দেয়ম্ এই উপদেশবাণীটিকে সকলের চেয়ে ব্যর্থ করছে নিজের বেলাতেই । কিন্তু, সত্যকে আমরা হাজার অস্বীকার করলেও সত্যকে তো আমরা বিনাশ করতে পারি নে। আমাদের অন্তরের সত্য মানুষটিকে আমরা যে চিরদিনই কেবল অভুক্ত রেখে দিচ্ছি তার দুর্গতি তো কোনো আরামে কোনো আড়ম্বরে চাপা পড়ে না। আমরা যার সেবা করি সে তো আমাদের বাচায় না ; আমরা যার ভোগের সামগ্ৰী জুগিয়ে চলি সে তো আমাদের এমন একটি কড়িও ফিরিয়ে দেয় না যাকে আমাদের চিরানন্দপথের সম্বল বলে বুকের কাছে যত্ন করে জমিয়ে রেখে দিতে পারি। আরামের পর্দা ছিন্ন করে ফেলে দুঃখের দিন তো বিনা আহবানে আমাদের স্থসজ্জিত ঘরের মাঝখানে হঠাৎ এসে দাড়ায় ; তখন তো বুকের রক্ত দিয়েও তার দাবি নিঃশেষে চুকিয়ে মিটিয়ে দিতে পারি নে। আর, অকস্মাৎ বজের মতে মৃত্যু এসে আমাদের সংসারের মৰ্মস্থানের মাঝখানটায় যখন মস্ত একটা ফাক রেখে দিয়ে যায় তখন রাশি রাশি ধনজনমান দিয়ে ফাক তো কিছুতে ভরিয়ে তুলতে পারি নে। যখন এক দিকে ভার চাপতে চাপতে জীবনের সামঞ্জস্য নষ্ট হয়ে যায়, যখন প্রবৃত্তির সঙ্গে প্রবৃত্তির ঠেকাঠেকি হতে থাকে, অবশেষে ভিতরে ভিতরে পাপের উত্তাপ বাড়তে বাড়তে একদিন যখন বিনাশের দাবানল দাউ-দাউ করে জলে ওঠে, তখন লোকজন সৈন্যসামন্ত কাকে ডাকব যে তার উপরে এক-ঘড়াও জল ঢেলে দিতে পারে? মূঢ়, কাকে প্রবল করে তুমি বলী হলে? কাকে ধনদান করে তুমি ধনী হতে পারলে ? কাকে প্রতিদিন রক্ষা করে করে তুমি চিরদিনের মতো বেঁচে গেলে ? আমাদের অস্তরের সত্য মানুষটি কোন আশ্রয়ের জন্যে পথ চেয়ে

  • ?)e