পিতার বোধ যে মাহবটি যাত্রী, যে পথের পথিক, অনন্তের অভিমুখে যার ডাক আছে, সে তোমার এই ভার টেনে টেনে বেড়াবে কেন । এই-সমস্ত বোঝার উপর দিনরাত্ৰি বুক দিয়ে চেপে পড়ে থাকবে, সে সময় তার কোথায়! এইজন্যে সে তাকেই চায় যার উপরে সে ভর দিতে পারবে, র্যার ভার তাকে বইতে হবে না। তুমি কি সেই নির্ভর নাকি ! তবে কী ভরসা দেবার জন্যে তুমি তার কানের কাছে এসে মন্ত্র জপছ ‘আমি আছি ! _ ،ہیں পিতা নোহসি– পিতা তুমি আছ, তুমি আছ— এই আমার অস্তরের একমাত্র মন্ত্র । তুমি আছ এই দিয়েই আমার জীবনের এবং জগতের সমস্ত-কিছু পূর্ণ। সত্যং’ এই বলে ঋষিরা তোমাকে একমনে জপ করেছেন, সে কথাটির মানে হচ্ছে এই যে : পিতা নোহসি পিতা তুমি আছ। যা সত্য তা শুধুমাত্র সত্য নয়, তাই আমার পিতা। কিন্তু, তুমি আছ এই বোধটিকে তো সমস্ত প্রাণমন দিয়ে পেতে হবে । তুমি আছ এ তো শুধু একটা মন্ত্র নয়। তুমি আছ এটা তো শুধু কেবল একটা জেনে রাখবার কথা নয় । তুমি আছ এই বোধটিকে যদি আমি পূর্ণ করে না যেতে পারি তবে কিসের জন্যে এ জগতে এসেছিলুম, কেনই বা কিছু দিনের জন্য নানা জিনিস আঁকড়ে ধরে ধরে ভেসে বেড়ালুম, শেষকালে কেনই বা এই অসংলগ্ন নিরর্থকতার মধ্যে হঠাৎ দিন ফুরিয়ে গেল ! . শক্ত হয়েছে এই যে, আমি আছি এই বোধটিকেই আমি দিবারাত্রি সকল রকম করেই অভ্যাস করে ফেলেছি। জীবনের সকল চেষ্টাতেই কেবল এই আমিকেই নানা রকম করে স্বীকার করে এসেছি ; প্রতি দিনের সমস্ত খাজনা তারই হাতে শেষ কড়াটি পর্যন্ত জমা করে দিয়েছি । a2}\2
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৪
অবয়ব