বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন ডাকি— যে যেমন ভাবে আসে আমুক— যে যেমন ভাবে ফিরে যায় ফিরে যাক । কেননা, এ তো আমাদের কারও একলার সামগ্রী নয় ; আজ আমাদের কণ্ঠ হতে যে স্তবসংগীত উঠবে সে তে কারও একলা কণ্ঠের বাণী নয় ; জীবনের পথে সম্মুখের দিকে যাত্রা করতে করতে মানুষ নানা ভাষায় র্যার নাম ডেকেছে, যে নাম তার সংসারের সমস্ত কলরবের উপরে উঠেছে, আমরা সেই সকল মানুষের কণ্ঠের চিরদিনের নামটি উচ্চারণ করতে আজ এখানে একত্র হয়েছি— কোনো পুরস্কার পাবার আশায় নয়— কেবল এই কথাটি বলবার জন্যে যে তাকে আমরা আপনার ভাষায় ডাকতে শিখেছি । মানুষের এই একটি আশ্চর্য সৌভাগ্য । আমরা পশুরই মতে আহার-বিহারে রত, আপন আপন ভাগ নিয়ে আমাদের টানাটানি, তবু তারই মধ্যেই ‘বেদাহমেতং পুরুষং মহাস্তম । আমরা সেই মহান পুরুষকে জেনেছি, সমস্ত মানুষের হয়ে এই কথাটি স্বীকার করবার জন্যেই উৎসবের আয়োজন । অথচ, আমরা যে সুখসম্পদের কোলে বসে আরামে আছি তাই আনন্দ করছি তা নয়। দ্বারে মৃত্যু এসেছে, ঘরে দারিদ্র্য ; বাইরে বিপদ, অস্তরে বেদনা ; মানুষের চিত্ত সেই ঘন অন্ধকারের মাঝখানে দাড়িয়ে বলেছে : বেদাহমেতং পুরুষং মহাস্তং আদিত্যবর্ণং তমস: পরস্তাং । আমি সেই মহান পুরুষকে জেনেছি যিনি অন্ধকারের পরপার হতে জ্যোতির্ময়রূপে প্রকাশ পাচ্ছেন । মকুন্তত্বের তপস্যা সহজ তপস্যা হয় নি। সাধনার দুর্গম পথ দিয়ে রক্ত-মাখা পায়ে মানুষকে চলতে হয়েছে ; তবু মানুষ আঘাতকে দুঃখকে আনন্দ বলে গ্রহণ করেছে, মৃত্যুকে অমৃত বলে বরণ করেছে, ভয়ের মধ্যে অভয়কে ঘোষণা করেছে, NՖչեր