বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন সঙ্গে পরামর্শ করে এ কাজ করতে গেলে দিন বয়ে যেত হৃদয়কে একান্ত করে অনন্তের দিকে পেতে ধরা মানুষের মধ্যেও দেখেছি ; সেইখানেই তো ওই বাণী উঠেছে : বেদাহমেতং পুরুষং মহাস্তং আদিত্যবর্ণং তমস: পরস্তাৎ । আমি সেই মহান পুরুষকে দেখেছি যিনি অন্ধকারের পরপর হতে জ্যোতির্ময়রূপে প্রকাশ পাচ্ছেন। এ তো তর্কযুক্তির কথা হল না— চোখ যেমন করে আপনার পাতা মেলে দেখে এ যে তেমনি করে জীবন মেলে দেখা । l, সত্য হতে অবচ্ছিন্ন করে যেখানে তত্ত্বকথাকে বাক্যের মধ্যে বাধা হয় সেখানে তা নিয়ে কথা-কাটাকাটি করা সাজে। কিন্তু, দ্রষ্টা যেখানে অনন্ত পুরুষকে সমস্ত সত্যেরই মাঝখানে দেখে বলেন ‘এষঃ’, ‘এই-যে তিনি, সেখানে তো কোনো কথা বলা চলে না । ‘সীমা’ শব্দটার সঙ্গে একটা ‘না’ লাগিয়ে দিয়ে আমরা "অসীম’ শব্দটাকে রচনা করে সেই শব্দটাকে শূন্তাকার করে বৃথা ভাবতে চেষ্টা করি ; কিন্তু অসীম তো না নন, তিনি যে নিবিড় নিরবচ্ছিন্ন ‘ই’ । তাই তো তাকে ওঁ বলে ধ্যান করা হয় । ওঁ যে ইl, ওঁ যে যা-কিছু আছে সমস্তকে নিয়ে অখণ্ড পরিপূর্ণতা। আমাদের মধ্যে প্রাণ জিনিসটি যেমন— কথা দিয়ে যদি তাকে ব্যাখ্যা করতে যাই তবে দেখি প্রতি মুহূর্তেই তার ধ্বংস হচ্ছে, সে যেন মৃত্যুর মালা। কিন্তু, তর্ক না করে আপনার ভিতরকার সহজ বোধ দিয়ে যদি দেখি তবে দেখতে পাই আমাদের প্রাণ তার প্রতি মুহূর্তের মৃত্যুকে অতিক্রম করে রয়েছে ; মৃত্যুর না’ দিয়ে তার পরিচয় হয় না, মৃত্যুর মধ্যে সেই প্রাণই হচ্ছে ‘ই’ । সীমার মধ্যে অসীম হচ্ছেন, তেমনি ওঁ । তর্ক না করে উপলব্ধি করে দেখলেই দেখা যায় সমস্ত চলে যাচ্ছে, সমস্ত স্থলিত হচ্ছে বটে, SV93. o