বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন তার বজ্র বিদ্যুৎকে নিঃশেষ করে মাটিতে লুটিয়ে গড়িয়ে পড়ে যায় তেমনি বিদ্রোহী মানুষ যেদিন ঝোড়ো মেঘের মতো কেঁদে ঝরে পড়বে সেদিন মরুভূমিতে বিকশিত হবে ফুল— তার মূল্য যে অনেক বেশি। সেইজন্য যুগযুগ রাত্রিদিন তিনি জেগে রইলেন, অপেক্ষা করে রইলেন – পাপীর পাপের মলিনতা ধৌত হয়ে কবে তার হৃদয় ফুলের মতো নির্মল হয়ে ফুটে উঠবে, বৎসরে বৎসরে উৎসব ব্যর্থ হয় ; দিনের পর দিন আলোকদূত ফিরে ফিরে যায় ; অন্ধকার নিশীথিনীর তারকার রাত্রির পর রাত্রি একই আহবানের পুনরাবৃত্তি করতে থাকে, ক্ষান্ত হয় না, ক্লাস্তি আসে না— কারণ, এই আশা যে জেগে রয়েছে যে যেদিন মানুষ ডাক শুনবে সেদিন সমস্ত সার্থক হবে । অাজ উৎসবের প্রাঙ্গণে আমরা এসেছি। এ দিন সকলের উৎসবের দিন কি না তা জানি না । সম্বৎসর তিনি ফুল ফুটিয়েছেন, প্রতিদিনই আমাদের ডেকেছেন। আজ কি আমরা নিজের হাতের তৈরি এই উৎসবক্ষেত্রে তার সেই প্রতি নিমেষের সাড়া দিচ্ছি ? হে উৎসবের দেবতা, তোমার উৎসবের ক্ষেত্র ব্যর্থ হবে না। তুমি সাজিয়েছ, আমরা এসেছি। আমরা বললুম : পিতা নোহসি। তুমি পিত, এই কথা স্বীকার করলুম। বললুম : নমস্তেহস্ত। নমস্কার সত্য হোক । নমস্কার তো সত্য হয় নি। সংসারের মধ্যে নমস্কার সত্য হয় নি । তোমাকে বঞ্চনা করেছি । ক্ষমতার পায়ে, ধনের পায়ে নমস্কার করেছি। হে আমার উৎসবদেবতা, আজ একটুখানি নমস্কার বাচিয়ে এনেছি— আজ আসবার সময় ধনমানের কাছ থেকে কুড়িয়ে-বাড়িয়ে একটু নমস্কার আনতে পেরেছি— সে না হতে পারে প্রতিদিনের নমস্কার, না হতে পারে সমস্ত জীবনের নমস্কার, কিন্তু এই ক্ষণকালের নমস্কার 308 o