মাধুর্ষের পরিচয় ও মানুষকে আশ্রয় করলুম— কিন্তু, জীবনের সেই-সব প্রেমের বিচ্ছিন্ন মুহূর্তগুলিকে ভরে তুলবে কেমন করে ! কোন মাধুর্যের প্লাবনে ছেদগুলো সব ভরে যাবে ! এমন একের কাছে আপনাকে নিবেদন করি নি বলেই এত বেদনা পাচ্ছি। তিনি যে আমার প্রিয়তম এই কথাটা জানলুম না বলেই এত দুঃখ আমার । তিনি সত্যই প্রিয়তম বলেই যা পাচ্ছি তারই মধ্যে দুঃখ রয়ে যাচ্ছে— তাতে প্রেম চরিতার্থ হচ্ছে কই । আমরা সব সন্ধানের মধ্যে এককেই খুঁজছি, এমনকিছুকে খুজছি যা সব বিচ্ছিন্নতাকে জোড়া দেবে। জ্ঞান কি জোড়া দিতে পারে ? জ্ঞান একটা বস্তুর সঙ্গে অন্য বস্তুকে একবার মিলিয়ে দেখে, একবার বিশ্লেষ করে দেখে । বিরোধকে মেটাতে পারে প্রেম, বৈচিত্র্যের সামঞ্জস্য ঘটাতে পারে প্রেম। বৈচিত্র্যের এই মরুভূমির মধ্যে আমাদের তৃষ্ণা কেবলই বেড়ে উঠতে থাকে— জ্ঞান সেই বৈচিত্র্যের অস্তহীন স্বত্রকে টেনে নিয়ে ঘুরিয়ে মারবে, সে তৃষ্ণ মেটাবে কেমন করে ! সেই প্রেম না জাগা পর্যন্ত কী ঘোরাটাই ঘুরতে হয় ! একবার ভাবি ধনী হই– ধনে বিচ্ছিন্নতা ভরে দেবে, সোনায় রুপোয় সব পূর্ণ হয়ে যাবে। কিন্তু, সোনায় রুপোয় সে ফাক কি ভরতে পারে ? খ্যাতি-প্রতিপ্রত্তি, মানুষের উপরে প্রভাব বিস্তার, কিছু দিয়েই সেই ফাক ভরে না। প্রেমে সব ফণক ভরে যায়, সব বৈচিত্র্য মিলে যায়। মানুষ যে তার সমস্ত চেষ্টার ভিতর দিয়ে কেবলই সেই প্রেমকে খুজে বেড়াচ্ছে, সত্যই যে তার প্রিয়তম। সত্য যদি প্রিয়তম না হবেন তবে তার বিরহে মানুষ কি এমন করে লুটিয়ে পড়ত ! যাকে সত্য বলে আঁকড়ে ধরতে যায় সে যখন শূন্ত হয়ে বায় তখন মানুষের সেই বেদনার মতো বেদনা আর কী আছে! মাহুষ VᏬ© Ꮔ
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬৮
অবয়ব