শান্তিনিকেতন উঠছে। কোথায় দেখেছি ? যেখানে মামুষের চিত্ত অচল নয় ; যেখানে তার নব নব উদযোগ ; যেখানে সামনের দিকে মাহুষের গতি ; যেখানে অতীতের খোটায় সে আপনাকে আপাদমস্তক বেঁধেছেদে স্থির হয়ে বসে নেই ; যেখানে আপনার এগোবার পথকে সকল দিকে মুক্ত রাখবার জন্যে মানুষ সর্বদাই সচেতন । জালানি কাঠ যখন পূর্ণতেজে জলে না তখন সে ধোয়ায় কিম্বা ছাইয়ে ঢাকা পড়ে ; তেমনি দেখা গেছে যে জাতি আপনার প্রাণকে চলতে না দিয়ে কেবলই বাধতে চেয়েছে, তার সত্য সকল দিক থেকেই মান হয়ে এসে তাকে নিজীব করে। কেননা, সত্যের ধর্ম জড়ধর্ম নয়, প্রাণধর্ম ; চলার দ্বারাই তার প্রকাশ । নিজের ভিতরকার বেগবান প্রাণের আনন্দে মানুষ যখন অক্লান্ত সন্ধানের পথে সত্যের পূজা বহন করে তখনই বিশ্বস্বষ্টির সঙ্গে তারও স্বষ্টি চারি দিকে বিচিত্র হয়ে ওঠে ; তখন তার রথ পর্বত লঙ্ঘন করে, তার তরণী সমুদ্র পার হয়ে যায়, তখন কোথাও তার আর নিষেধ থাকে না। তখন সে নূতন নূতন সংকটের মধ্যে ঘা পেতে থাকে বটে, কিন্তু মুড়ির ঘা খেয়ে ঝর্নার কলগান যেমন আরও জেগে ওঠে তেমনি ব্যাঘাতের দ্বারাই বেগবান প্রাণের মুখে নূতন নূতন ভাষার স্বষ্টি হয়। আর, যার মনে করে স্থির হয়ে থাকাই সত্যের সেবা, চলাই সনাতন সত্যের বিরুদ্ধে অপরাধ, তাদের অচলতার তলায় ব্যাধি দারিদ্র্য অপমান অব্যবস্থা কেবলই জমে ওঠে ; নিজের সমাজ তাদের কাছে নিষেধের কাটাখেত, দূরের লোকালয় তাদের কাছে দুর্গম। নিজের দুর্গতির জন্যে তারা পরকে অপরাধী করতে চায় ; এ কথা ভুলে যায় যে, যে-সর দড়িদড় দিয়ে তারা সত্যকে বন্দী করতে চেয়েছিল সেইগুলো দিয়ে ՎNչԵ
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭৯
অবয়ব