বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটি মন্ত্র. নীতিতে মানুষকে অবজ্ঞা করা ধর্ম বলে শেখায় সে সমাজের ভিতর থেকে মানুষ আপনার অনন্তকে পায় না ; এইজন্যই সে সমাজে কেবল শাসনের পীড়া আছে, কিন্তু ত্যাগের আনন্দ নেই। মানুষকে আমরা মানুষ বলেই জানি নে যখন তাকে আমরা ছোটে করে জানি । মানুষ সম্বন্ধে যেখানে আমাদের জ্ঞান কৃত্রিম সংস্কারের ধূলিজালে আবৃত সেখানেই মামুষের মধ্যে ভূমা আমাদের কাছে আচ্ছন্ন। সেখানে কৃপণ মানুষ আপনাকে ক্ষুদ্র বলতে, অক্ষম বলতে লজ্জা বোধ করে না । সত্যকে মতে মানি, কিন্তু কাজে করতে পারি নে, এ কথা স্বীকার করতে সেখানে সংকোচ ঘটে না। সেখানে মঙ্গল- ও বাহ-আচার-গত হয়ে ওঠে । কিন্তু,মানুষের মধ্যে ভূম যে আছে, এইজন্যই 'ভূমাত্বেব বিজিজ্ঞাসিতব্য’। ভূমাকে না জানলে সত্য জানা হয় না। সমাজের মধ্যে যখন সেই জানা সকল দিকে জেগে উঠবে তখন মানুষ, আনন্দরূপমমৃতং, আপনার আনন্দরূপকে অমৃতরূপকে সর্বত্র স্বষ্টি করতে থাকবে । প্রদীপের শিখার মতো আত্মদানেই মানুষের আত্ম-উপলব্ধি । এই কথাটি আপনার মধ্যে নানা আকারে প্রত্যক্ষ করে মানুষ অনস্তস্বরূপকে বলেছে ‘আত্মদা’ । তিনি আপনাকে দান করছেন, সেই দানেই তার পরিচয় । এইবার আমাদের সমস্ত মন্ত্রটি একবার দেখে নিই। সত্যং জ্ঞানমনস্তং ব্রহ্ম । অনস্ত ব্রহ্মের সীমারূপটি হচ্ছে সত্য । বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে সত্যনিয়মের সীমার মধ্য দিয়েই অনস্ত আপনাকে উৎসর্গ করছেন। প্রশ্ন এই যে, সত্য যখন সীমায় বদ্ধ তখন অসীমকে প্রকাশ করে কেমন করে ? তার উত্তর এই মে, সত্যের সীমা আছে, কিন্তু সত্য সীমার দ্বারা বদ্ধ নয়। এইজন্যই সত্য গতিমান। সত্য আপনার গতির দ্বারা কেবলই আপনার

৩৭৩