বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটি মন্ত্র রহস্তটিকে বুকের ভিতরে নিয়ে বিশ্বচরাচর রসবৈচিত্র্যে বিচিত্র হয়ে উঠেছে। সত্যের সঙ্গে আনস্তের এই নিত্যযোগ লোকস্থিতির শাস্তিতে, সমাজস্থিতির মঙ্গলে ও জীবাত্মাপরমাত্মার একাত্ম মিলনে শাস্তং শিবমদ্বৈতম রূপে প্রকাশমান হয়ে উঠছে। এই শাস্তি জড়ত্বের নিশ্চল শান্তি নয়, সমস্ত চাঞ্চল্যের মর্মনিহিত শান্তি ; এই মঙ্গল দ্বন্দ্রবিহীন নিজীব মঙ্গল নয়, সমস্ত দ্বন্দ্বমস্থনের আলোড়নজাত মঙ্গল ; এই অদ্বৈত একাকীরত্বের অদ্বৈত নয়, সমস্ত বিরোধবিচ্ছেদের সমাধানকারী অদ্বৈত । কেননা, তিনি ‘বলদা আত্মদা ; সত্যের ক্ষেত্রে শক্তির মধ্যে দিয়েই তিনি কেবলই আপনাকে দান করছেন। সত্যং জ্ঞানমনস্তং ব্রহ্ম— এই মন্ত্রটি তো কেবলমাত্র ধ্যানের বিষয় নয়, এটিকে প্রতি দিনের সাধনায় জীবনের মধ্যে গ্রহণ করতে হবে । সেই সাধনাটি কী ? অামাদের জীবনে সত্যের সঙ্গে অনন্তের যে বাধা ঘটিয়ে বসেছি, যে বাধা-বশত আমাদের জ্ঞানের বিকার ঘটছে, সেইটে দূর করে দিতে থাকা । এই বাধা ঘটিয়েছে আমাদের অহং । এই অহং আপনার রাগদ্বেষের লাগাম এবং চাবুক নিয়ে আমাদের জীবনটাকে নিজের স্থখদুঃখের সংকীর্ণ পথেই চালাতে চায় । তখন আমাদের কর্মের মধ্যে শান্তকে পাই নে, আমাদের সম্বন্ধের মধ্যে শিবের অভাব ঘটে এবং আত্মার মধ্যে অদ্বৈতের আনন্দ থাকে না। কেননা, সত্যং জ্ঞানমনস্তং ব্ৰহ্ম । অনন্তের সঙ্গে যোগে তবেই সত্য জ্ঞানময় হয়ে ওঠে, তবেই আমাদের জ্ঞানবলক্রিয়া স্বাভাবিক হয় । যাদের জীবন বেগে চলছে; অথচ কেবলমাত্র আপনাকেই কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করছে, তাদের সেই চল, সেই বলক্রিয়া কলুর বলদের চলার মতো ; তা স্বাভাবিক নয় ; ত৷ \óኻ¢