भूखिंद्र नैौको ভাবনাচিস্তা নেই, এতেই সংসার চলে যাচ্ছে তা জানি । কিন্তু, এ আমার নয়।’ সংসারের পনেরো-আনা লোক যেমন ধনমানে বেষ্টিত হয়ে সন্তুষ্ট হয়ে আছে, তেমনি যে-সমস্ত আচারবিচার চলে আসছে তারও মধ্যে তারা আরামে রয়েছে । কিন্তু, একবার যদি কোনো আঘাতে এই আবরণ ছিন্ন হয়ে যায় অমনি মনে হয়, এ কী কারাগার । এ আবরণ তো আশ্রয় নয় । এক-একজন লোক সংসারে আসেন র্যাদের কোনো আবরণে আবদ্ধ করতে পারে না । তাদের জীবনেই বড়ো বড়ো আঘাত এসে পৌছোয় আবরণ ভাঙবার জন্যে— এবং তারা সংসারে যাকে অভ্যন্ত আরাম বলে লোকে অবলম্বন করে নিশ্চিন্ত থাকে তাকে কারাগার বলেই নির্দেশ করেন । আজ যার কথা বলছি তার জীবনে সেই ঘটনা ঘটেছিল । তার পরিবারে ধনমানের অভাব ছিল না, চিরাগত প্রথা সেখানে আচরিত হত। কিন্তু, এক মুহূর্তেই মৃত্যুর আঘাতে তিনি যেমনি জাগলেন অমনি বুঝলেন যে এর মধ্যে শাস্তি নেই। তিনি বললেন, ‘আমার পিতাকে আমি জানতে চাই । দশজনের মতো করে তাকে জানতে চাই না, তাকে জানতে পারি না । সত্যকে তিনি জীবনে প্রত্যক্ষভাবে জানতে চেয়েছিলেন ; দশজনের মুখের কথায়, শাস্ত্রবাক্যে, আচারে বিচারে তাকে জানবার চেষ্টাকে তিনি পরিহার করেছিলেন। সেই-যে তার উদবোধন সে প্রত্যক্ষ সত্যের মধ্যে উদবোধন , সেই প্রথমযৌবনের প্রারম্ভে যে র্তার দীক্ষাগ্রহণ সে মুক্তির দীক্ষা-গ্রহণ। যেদিন পক্ষীশাবকের পাখা ওঠে সেইদিনই পক্ষীমাতা তাকে উড়তে শেখায়। তেমনি তারই দীক্ষার দরকার যার মুক্তির দরকার। চারি দিকের জড় সংস্কারের আবরণ থেকে তিনি মুক্তি Woy WS),
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৪
অবয়ব