শান্তিনিকেতন কিছুই পায় নি। সে হিসাবে এখানকার সমগ্র স্বষ্টির চেহারা দেখা যায় ন। । এই-যে এখানে চারি দিক থেকে প্রাণের প্রবাহ আসছে, এ ব্যাপারটাকে আমাদের খুব সত্য ক’রে, খুব বড়ো করে অন্তরের মধ্যে দেখবার শক্তি লাভ করতে হবে . এ একটা বিশ্বের ব্যাপার। কত দিক থেকে প্রাণের ধারা এখানে আসছে এবং কত দিকে দিগন্তরে এখান থেকে পুনরায় বয়ে চলবে— একে আকস্মিক ঘটনা মনে করবার কোনো কারণ নেই। বিশ্বের কোনো ব্যাপারকেই যে আমরা দেখতে পাই নে তার কারণ আমরা সমস্ত মন দিয়ে দেখি নে। চোখ দিয়ে দেখতে পাই নে, কারণ এ তো চোখ দিয়ে দেখবার জিনিস নয় । একে যে চরিত্র দিয়ে দেখতে হয় । স্বভাব দিয়ে দেখতে হয় । স্বভাবের ভিতর দিয়ে দেখতে হয় বলেই স্বভাবকে বিশুদ্ধ করা দরকার হয় । আমরা এই আশ্রমে যতই উপদেশ দিই এবং যতই উপদেশ পাই-না কেন, এই আশ্রমের ভিতরে যে অমৃত-উৎসটি উঠছে তাকে দেখবার, তার কাছে যাবার শক্তি যে আমাদের সকলের রয়েছে তা নয়। সেই দেখতে পাই না বলেই উপদেশে কিছু হয় না, কথারচনা ব্যর্থ হয়। সেই আনন্দ স্বরূপকে দেখলেই আনন্দ যে ভরে উঠবে। সেই আনন্দে যে সমস্ত ত্যাগ সহজ হয়ে যাবে, বিরোধ দূর হবে, সব নির্মল হবে, সকল বাধা কেটে যাবে। আনন্দের লক্ষণ দেখলেই চেনা যায়। যখন দেখি যে আমাদের ভিতরে দুশ্চিস্তা ও দুশ্চেষ্টা থামছে না, অন্যায় ক্ষুদ্রতা মিথ্যা কত কী আমাদের ঘিরে রয়েছে, তখন বুঝতে পারছি যে, সেই আনন্দকে দেখবার শক্তি আমাদের হয় নি— তার লক্ষণ আমাদের মধ্যে ফুটছে না । 8. У е
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২১
অবয়ব