পাতা:শান্তিলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডোবাটার জল সবুজ হয়ে গেজিয়ে উঠেছে। তার চেয়ে এই কাদাগোলা নদীর জল অনেক শুদ্ধ ও পরিষ্কার। রাত্রের বৃষ্টির স্পর্শে ভেরটা ঠাণ্ড মিষ্টি লাগে খালি গায়ে। সারা আকাশ জুড়ে ছাড়াছাড়া পুঞ্জ পুঞ্জ সাদা মেঘ সমান গতিতে দ্রুত উত্তরে পাড়ি দিচ্ছে। চারিদিকে কাছে ও দূরে এলোমেলোভাবে উচিয়ে আছে কারখানার চিমনি। ওগুলির তুলনায় রাস্তায় জলের কলের নলটা কত সরু । কিন্তু সারা এলাকায় যতগুলি চিমনি রাস্তায় বস্তিতে ততগুলি জলের কলও বুঝি নেই। উপোসী মানুষের জলের তেষ্টাও মেটে না । মুখ দিয়ে জল গিলে খাবার তেষ্টাটুকু ছাড়া সর্বাঙ্গের যে শত রকম তেষ্টা আছে ! কাপড়-গামছা বাসনপত্ৰ ভালোভাবে ধুয়ে মেজে সাফ করার যে দরকারী সাধ আছে! দাতন ঘষতে ঘষতে জলের কালে লাইন আর হাইড্রাণ্টের চোয়ানো জলে স্নানের চেষ্টা দেখে আকাশের দিকে চেয়ে থুতু ফেলে মোতিলাল। বিড়বিড় করে কী বলে সে-ই জানে। বোধহয় ওই উচোনো চিমনিগুলিকেই একটা অশ্রাবা গাল দেয়। মানুষটা ঢাঙা। চওড়া বুকের পাজারগুলি ঠেলে উঠেছে। মুখভরা খোচা খোচা কঁচাপাকা দাড়িগোফ। মাথায় বড়ো টাক, টাকের বাড়ি ঠেকাতেই যেন কঁচাপাকা চুলের বাঁধ দিয়েছে টাকাটা चि6 ! মোতিলালের হাতে ছিল লোহার শিক বাকিয়ে ঘরে তৈরী নকল চাবি। খানিক ধ্বস্তাধস্তি করে হাইড্রান্টের মুখটা খুলে দেয়। হাতের তালু দিয়ে হাইড্রান্টের মুখ চেপে সরু। ধারায় ধীরে ধীরে জল তুলে লোটা ভরে রামসুখ স্নান করছিল। পা দিয়ে চেপে سوا