পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাল্যে
২৩

 একটা কথা বলিতে ভুলিয়া গিয়াছি। আমি বেশ গান গাহিতে পারিতাম। স্বাভাবিক শক্তিতেই আমার সুর তাল জ্ঞান ছিল, কণ্ঠস্বরও নাকি আমার সুমিষ্ট―যাঁহারা আমার গান শুনিয়াছেন, তাঁহারা সকলেই আমার এই প্রশংসা করিতেন। সঙ্গীতের ক্ষমতা আমার কিরূপে জন্মিল, আমি বুঝিতে পারি না। আমার পিতামাতা কেহই সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন না। বাবা আমাকে একটী খুব ভাল টেবিল হারমোনিয়ম কিনিয়া দিয়াছিলেন। এক জন শিক্ষক আমাকে এস্রাজ বাজ্‌না ও গান শিখাইতেন।

 একদিন দেখিলাম নন্দদাদা দুইখানি লম্বা ছোরা কিনিয়া আনিয়াছে। আমার সম্মুখে টেবিলের উপর ছোরা দুইখানি রাখিয়া বলিল “মানি, তোকে ছোরা খেলা শিখ্‌তে হবে।” আমি একখানি ছোরা হাতে লইয়া বলিলাম, “সে কি নন্দ-দা?” নন্দ-দা আর একখানি ছোরার বাঁট ধরিয়া তাহার অগ্রভাগ আমার বুকের দিকে লক্ষ্য করিল। অপর হস্তে আমার ডান হাতের কব্জি ধরিয়া এমন ভঙ্গিমায় দাঁড়াইল, যেন সে সত্যই আমাকে মারিতে উদ্যত। আমিও বা হাতে নন্দদা’র ডান হাতের কব্জি ধরিয়া ফেলিলাম। সে বলিল “এই ত ঠিক, এমনি করেই ত আট্‌কাতে হয়।” আমি কিছুদিন পূর্ব্বে এক স্বদেশী সভায় ছেলেদের ছোরা খেলা দেখিয়াছিলাম, আমি বলিলাম “মেয়েদের এসব শিখে কি হবে?” নন্দলাল বলিল “কেনরে মানি, শুনিস্ নি সেই গান,―“আপনার মান রাখিতে জননী আপনি কৃপাণ ধরগো”

 আমি বলিলাম “হাঁ,―মনে আছে।” এই বলিয়া আমি