পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভুল ভাঙ্গিল
৬৯

 আমি হুকুম তামিল করিয়া বলিলাম “রমশদা, দেখছ ত আমার দেহের গতিক। এমন অবস্থায় কোন ভাল সহরে— যেখানে ভাল ডাক্তার অথবা প্রসূতি হাসপাতাল আছে—এমন স্থানে না থাকিলে আমার ভয় হয়। তাতেও অনেক টাকা খরচ হবে।

 রমেশদা টলিতে টলিতে খাটীয়ার উপর শুইয়া পড়িলেন। সিগারেট টানিতে টানিতে বলিলেন “টাকার আর ভাবনা কি মানু। দেখছিস্ ত এক থোকে আড়াই হাজার টাকা।” রমেশদা কাশিতে কাশিতে ‘ওয়াক্ ওয়াক্’ করিতে লাগিলেন। আমি একটা বাটী সম্মুখে রাখিয়া বলিলাম, “আড়াই হাজার কেন, তিন হাজার বল।” রমেশদা চক্ষু বিস্ফারিত করিলেন তাঁহার বর্মির ভাব চলিয়া গেল।

 আমি বলিলাম “রমেশদা, তুমি তিন হাজার যে ভাবে পেয়েছ তা আমি জানি। সেই রকম রোজগারের আর এক কানাকড়িও আমি চাহি না। যদি ক্ষমতা থাকে, সৎপথে থেকে উপার্জ্জন করে আমায় রাখ— চুরি জোচ্চুরির পথে গিয়ে নিজে মজোনা— আমায়ও মজিও না।”

 রমেশদা নেশার ঘোরে বলিতে লাগিলেন “মানু, তোকে নিয়ে আমি সর্ব্বত্যাগী হলুম, আর তুই আমায় চোর বল্‌ছিস? আমি কার জন্যে চুরি করেছি?— কার জন্য স্ত্রীকে ছেড়েছি, মাকে ছেড়েছি?— কার জন্য জেলে পা বাড়িয়েছি? যাঃ—চ্চলে, এই দুনিয়ায় দরদী কেউ নেই— প্রেমের মর্যাদা কেউ বুঝলে না। ওরে, চোর না হলে কেউ প্রেমিক হয় না। এই মথুরা তার