পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সমাজ চিত্র
১০৩

খুব কাজে লাগে। রাণী মাসী অনেকে গান শিখাইবার জন্য একজন ভাল ওস্তাদ রাখিল। সে বলিল, “তোমার ব্রহ্ম সঙ্গীত অথবা স্বদেশী গান ত এখানে চলবে না। লপেটা, হিন্দি গজল অথবা উচ্চ অঙ্গের খেয়াল ঠুংরা এসব হ’ল বেশ্যা মহলের রেওয়াজ। কীর্ত্তনও শিখিতে পার।” আমি তিন চারি মাসের মধ্যেই সঙ্গীত শিক্ষায় উন্নতি দেখাইলাম। কীর্ত্তন শিখিতে কিছু দেরী হইল।

 ছলনা শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে লোক চিনিবার বিদ্যাও শিখিতে হইয়াছিল। কে চুরির মতলবে আসিয়াছে— কে কুৎসিত রোগাক্রান্ত— কে দুষ্ট প্রকৃতির লোক, কে ভালমনুষ ও সরলচিত্ত, এ সকল আমাদিগকে মুখ দেখিয়া ধরিতে হয়। অনেক সময়ে বিপদেও পড়িয়াছি। একদল লোক আছে, তাহারা বেশ্যা বাড়ীতে ডাকাতি করিয়া বেড়ায়। কখনও কখনও বেশ্যাকে হত্যাও করিয়া থাকে। এমনিভাবে প্রাণটী হাতে লইয়া পতিতা নারীকে ব্যবসা করিতে হয়। দু-পাঁচ টাকার জন্য কোন নারী একেবারে অপরিচিত পুরুষকে গ্রহণ করে— হয়ত সেই বিশ্বাসঘাতক স্ত্রীলোকটীর বুকে ছুরি বসাইয়া তাহার গহনাপত্র লইয়া পলায়ন করিল। হতভাগিনী আর চক্ষু মেলিল না। পতিতারা পাপের শাস্তি এইরূপেও হাতে হাতে পায়।

 আমার ঘরে একটী ভদ্রলোক আসিতেন। তিনি কলিকাতার একজন ভাল চিকিৎসক। আজ পর্য্যন্ত তিনি নাকি বিবাহ করেন নাই। তাঁহার নিকট আমি অনেক উপকার পাইয়াছি। আমার শরীর যাহাতে শীঘ্র সারে, সেইজন্য তিনি খুব ভাল ভাল