পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমরেশকে খাওয়াতে খাওয়াতে সে অনর্গল কথা বলে যায়। কথার ফাকে ফঁাকে সোধে যায়-এটা খা, ওটা খা ।

আর কত খাব ছোটমামী ? পকেটে করে। বরং নিয়ে যাই, আবার খিদে পেলে খাব। টাকার কথাটা বল ?
তুই সত্যি বোকা হাবা, নইলে বাপ মরতেই আমন কারবারটা ভুবতে বসে ? টাকার কথা কি বলব তোকে ? টাকার মালিকের সঙ্গে আগে কথা বলি, তোর মামা কি বলে শুনি, তবে তো তোকে বলব ।
তোমার বুঝি হাত নেই ? সরমা হেসে বলে, কি যে করব তোকে নিয়ে । টাকার ব্যাপারে

মেয়েমানষের হাত থাকে ? এবার খানিকটা অভিনয়ের সুরে আব্দার জানিয়ে সমরেশ বলে, চেষ্টা করবে তো ? সরমা বলে, চেষ্টা করব না ? যতক্ষণ রাজী না হয় তোর মামাকে রেহাই দেব ভেবেছিস ? সারারাত ঘুমোতে দেব না। কবে তোর বাপের সঙ্গে কি হয়েছিল, মানুষটা মরে গেছে, আজও তার জের টানা কেন রে বাবা ! এবার মিটিয়ে দিলেই হয়। বিয়ের পর থেকে শুনে আসছি আমার এক ননাদ আছে, মস্ত বড়লোকের গিন্নি । আজ পর্যন্ত ননদকে চোখে দেখলাম না । এবার মিটমাট করিয়ে দেব-একদিন গিয়ে হাজির হব তোদের বাড়ীতে । সরমা নিজে তোয়ালে দিয়ে তার মুখ মুছিয়ে দেয়। খাটে পাশে বসিয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে গালে গাল রেখে মেহসিক্ত গলায় বলে, কাল এই টাইমে আসিস। টাকার ব্যাপার, হবে কি না জানি না। তবু আসিস । নগদ না পারি, চেক হয়তো আদায় করে রাখতে পারব তোর জন্য । পরদিন অসময়ে সমরেশের মামাবাড়ী গিয়ে জানিবার দরকার হয় না। খবরটা যে তার স্নেহময়ী মামী টাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছে কিনা ৷ Հեr