পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমরেশের শালটা ছিল মার প্রথম বয়সের সখের জিনিষ-গীতের দিনে কোথাও যেতে হলেই শুধু গায়ে চড়ত। এত পুরানো হলেও, কয়েক যায়গায় পোকায় কেটে ফুটাে করে দিয়ে শীত ঠেকানো যায়। * ' প্রীতির মত সুমতিও পিঠোপিঠি বোন-ছোটর দিকে। কুড়ি পেরিয়ে সুমতি একটু মোটা হয়ে গেছে। আজে বাজে তারকারী দিয়ে পচা চাল আট খেয়েই কিনা কে জানে । কিন্তু মুখখানা যেন লক্ষ্মী প্ৰতিমার ছাচে গড় । ধীর স্থির মেয়ে । তার খেয়াল থাকে না, রোজই প্ৰায় গায়ের লেপটা ঠেলে সরিয়ে দিয়ে উঠে বসতে গিয়ে ছেড়া শাড়ীর জন্য লজ্জা পেয়ে তারপর সামলে নেয়। আরও দুতিন বোনেরও এই লেপটা দিয়েই শীত কাটছে । খসা আঁচলটা গায়ে জড়িয়ে আলগা খোপাটা আঁটতে আঁটতে সুমতি একটা হাই তোলে । জিজ্ঞাসা করে, ছাই রঙের উলটা কাল এনেছিস সমু ? পিঠোপিঠি বড় বোন প্রীতিকে সমরেশ যেমন নাম ধরে ডেকে তুই বলে কথা কয়, পিঠোপিঠি বড় ভাই তাকেও সুমতি তেমনি নাম ধরে ডেকে তুই বলে কথা কয় । ছেলেবেলা থেকেই এটা চালু হয়ে গেছে । সমরেশ বিড়িতে টান দিয়ে ধোয়া ছেড়ে জবাব দিতে যাবে, প্রীতি কড়ায়ে ডাল সম্ভার দিতে দিতে চেচিয়ে বলে, ও উলটা দু’দিন পরে আসবে মতিসমুর হাতে এখন পয়সা নেই। বাদামী উলের কাজটা সার না। আগে, সেন-গিল্পী তাগিদ দিচ্ছে ?

চুপ কর মুখপুড়ি । সমু আগে ওই উল এনে দেবে। তবে আমি সেন

গিল্পীর কাজে হাত দেব । tr