পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ‘কেন?'

 ‘আমার ভালো-লাগায় যা পাই সেও আমার, আর তোমার ভালো-লাগায় যা পাব সেও আমার হবে। আমার নেবার অঞ্জলি হবে দুজনের মনকে মিলিয়ে। কোলকাতায় তোমার ছোটো ঘরের বইয়ের আলমারিতে এক শেলফেই দুই কবির কবিতা ধরাতে পারব। এখন তোমার কবিতাটি বলো।'

 ‘আর বলতে ইচ্ছে করছে না। মাঝখানে বডডো কতকগুলো তর্কবিতর্ক হয়ে হাওয়াটা খারাপ হয়ে গেল।'

 ‘কিছু খারাপ হয় নি, হাওয়া ঠিক আছে।'

 অমিত তার কপালের চুলগুলো কপালের থেকে উপরের দিকে ঠেলে দিয়ে খুব দরদের সুর লাগিয়ে পড়ে গেল—

‘সুন্দরী তুমি শুকতারা।
সুদূর শৈলশিখরান্তে,
শর্বরী যবে হবে সারা।
দর্শন দিয়ো দিক্‌ভ্রান্তে।'

  বুঝেছ বন্যা? চাঁদ ডাক দিয়েছে শুকতারাকে, সে আপনার রাত পোহাবার সঙ্গিনীকে চায়। নিজের রাতটার 'পরে ওর বিতৃষ্ণা হয়ে গেছে।—

ধরা যেথা অম্বরে মেশে
আমি আধো-জাগ্রত চন্দ্র,
আঁধারের বক্ষের 'পরে
আধেক আলোকরেখা-রন্ধ্র।

  ওর এই আধখানা জাগা, ওই অল্প একটুখানি আলো,

১২৪