পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রতিবাদ না করে পিঠ ফুলিয়ে চলে গেল। এইবার কেটি সহ্য করতে পারলে না। প্রবল আক্রোশে কুকুরটাকে কান-মলা দিতে লাগল। এই কান-মলার অনেকটা অংশই নিজের ভাগ্যের উদ্দেশে। কুকুরটা কেঁই কেঁই স্বরে অসদ্‌ব্যবহার সম্বন্ধে তীব্র অভিমত জানালে। ভাগ্য নিঃশব্দে হাসল।

 এই গোলমালটা একটু থামলে পর অমিত সিসিকে লক্ষ্য করে বললে, 'সিসি, এরই নাম লাবণ্য। আমার কাছ থেকে এঁর নাম কখনো শোন নি, কিন্তু বোধ হচ্ছে আর-দশজনের কাছ থেকে শুনেছ। এর সঙ্গে আমার বিবাহ স্থির হয়ে গেছে, কলকাতায়, অঘ্রান মাসে।'

 কেটি মুখে হাসি টেনে আনতে দেরি করলে না। বললে, ‘আই কন্‌গ্র্যাচুলেট। কমলালেবুর মধু পেতে বিশেষ বাধা হয় নি বলেই ঠেকছে; রাস্তা কঠিন নয়, মধু লাফ দিয়ে আপনি এগিয়ে এসেছে মুখের কাছে।'

 সিসি তার স্বাভাবিক অভ্যাসমত হী হী করে হেসে উঠল।

 লাবণ্য বুঝলে, কথাটায় খোঁঁচা আছে, কিন্তু মানেটা সম্পূর্ণ বুঝলে না।

 অমিত তাকে বললে, 'আজ বেরোবার সময় এরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল 'কোথায় যাচ্ছ।' আমি বলেছিলুম ‘বন্য মধুর সন্ধানে'। তাই এরা হাসছে। এটা আমারই দোষ; আমার কোন্‌ কথাটা যে হাসির নয় লোকে সেটা ঠাওরাতে পারে না।'

 কেটি শান্ত স্বরেই বললে, ‘কমলালেবুর মধু নিয়ে তোমার

১৬৩