পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় Sav পাবেন। সারদা দিদি, খেয়ে নিন । বাবা বলেন এমনতরো অবস্থায় সংসারে একজন উপোস করে থাকলেই আর দোষ হয়না । সত্যি নয়। মা ? এই বলিয়া সে মায়ের মুখের দিকে চাহিয়া উত্তরের জন্য অপেক্ষা করিয়া ल्लि। সবিতা জানেন তঁহাদের বৃহৎ পরিবারে বাধ্য হইয়াই একদিন এনিয়ম প্রচলিত হইয়াছিল। ঠাকুরের পূজাৱী-ব্ৰাহ্মণ নিযুক্ত থাকিলেও ব্ৰজবাবু সহজে এ কাজ কাহারও প্রতি ছাড়িয়া দিতে চাহিতেননা, অথচ চিরদিন ঢ়িলা স্বভাবের লোক বলিয়া পূজায় তাহার প্রায়ই অযথা বিলম্ব ঘটিয়া যাইত । কিন্তু মেয়ের প্রশ্নের উত্তরে কি যে তঁহার বলা উচিত তাহা ভাবিয়া পাইলেননা । জবাব না পাইয়া রেণু বলিতে লাগিল, কিন্তু আমার নতুন-মা’র বেলা সহঁতনা, খেতে একটু দেরি হলেও তিনি ভয়ানক রেগে যেতেন । বাবা তাই আমাকে একদিন দুঃখ করে বলেছিলেন যে দেশের বাড়ীতে কতদিন যে আপনার এ-বেলা খাওয়া হতোনা, উপোস করে কাটাতে ; হতো তার সংখ্যা নেই, কিন্তু কোনদিন রাগ করে বলেননি। ঠাকুর বিলিয়ে দিতে । সারদা আশ্চৰ্য্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, তিনি কি ঠাকুর বিলিয়ে দিতে বলেন নাকি ? -ই, কতদিন। বলেন গঙ্গায় ফেলে দিয়ে আসতে। --তোমার বাবা কি বলেন ? সারদার প্রশ্নের উত্তর সে মাকেই দিল, বলিল, আমার বয়স তখন ন’ বচ্ছর। বাবা ডেকে পাঠালেন, তঁর ঘরে গিয়ে দেখি তার চোখ দিয়ে জল পড়চে । আমাকে কাছে বসিয়ে আদর করে বললেন, আমার গোবিন্দর সব ভার ছিল একদিন তোমার মায়ের । আজ থেকে তুমিই ঠার কাজ করবে, --পারবে তা মা ? বললুম পারবো বাবা । তখন থেকে