পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S ዓ¢ শেষের পরিচয় তারকের কুষ্ঠিত মুখের দিকে ক্ষণকাল তীক্ষ দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকিয়া সবিতা বলিলেন-রাজুৱা তুমি ঘনিষ্ঠ বন্ধু শুনেচি। আমি জানতাম তাকে তুমি চেনে। এখন বুঝতে পারছি, তুমি আমার রাজুকে চেনোনি বাবা । তাৱক চঞ্চল হইয়া বলিল-কেন মা ? সবিতা বলিলেন-যত বড় অন্যায়ই যে-কেউ তার উপরে করুকনা, --রাজু দুনিয়ায় কারো কাছে কারো নামে কখনো অভিযোগ করেনি, করবেওনা । অভিযোগ করার শিক্ষা জীবনে সে পায়নি তারক, সহ করার শিক্ষাই পেয়েছে। তারক আরও কুষ্ঠিত হইয়া পড়িল । বলিল-আমাকে মাপ করুন মা। আমার বলবার দোষে ভুল বুঝবেননা। বলতে চেয়েছিলাম রাখালের কাছে আপনি আমার সম্বন্ধে যে-ঘটনা শুনেছেন কিংবা শুনবেন, সেটা বাহ্যতঃ সত্য হলেও সমস্ত সত্য নয়। সবিতা হাসিয়া কহিলেন-আমি রাজুর কাছে কিছুই শুনিনি বাবা, কোনওদিন শুনতে পাবওন, সে সম্বন্ধে তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পার। তারক অকস্মাৎ ঈষৎ উত্তেজিত হইয়া বক্তৃতার ভঙ্গীতে হাত মুখ নাড়িয়া বলিতে লাগিল- কিন্তু এটা আমি কিছুতেই মানতে পারবোন মা, আপনার কাছেও আমাদের বিচ্ছেদের কারণ গোপন করা তার উচিত হয়েছে! আপনি শুধু তাকে স্নেহৱসে ও অন্নারসেই পুষ্ট করে তোলেননি, আপনার কাছেই পেয়েছে সে তার শিক্ষা দীক্ষা যা’ কিছু সমস্ত। আজ সে যে পৃথিবীতে এখনও বেঁচে আছে এবং ভদ্রলোকের মতই বেঁচে আছে, এর জন্য বিপুল ঋণ তার কার কাছে? কার আশ্চৰ্য্য অসাধারণ মন অসাধারণ জীবন রাখালের দৃষ্টি ও মনকে এতখানি প্রসার করে তুলেছে! কার অপার স্নেহ, অন্তরাল হতে বিধাতার করুণার মতই তার জীবনকে