পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় ܕܘ݂ ܩ -ই মা, কালই সবাইকে নিয়ে রওনা হতে হবে । -ফিরতে দিন আষ্ট্রেক দেরি হবে বোধ হয় ? -ই মা, আট-দশদিন লাগবে। নতুন-মা ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, ক’টা বাজিলো রাজু ? রাখাল দেয়ালের ঘড়ির পানে চাহিয়া বলিল, পাচটা বেজে গেছে । আমার ভয় ছিল আপনার আসতেই হয়ত বিলম্ব হবে, কিন্তু আজ কাকাবাবুই দেরি করলেন। দেরি হোক বাবা, তিনি এলে বাচি । রাখাল হাসিয়া বলিল, পাগলের সঙ্গে বিয়েটা যখন বন্ধ হয়ে গেছে তখন ভাবনার তো আর কিছু নেই মা । তিনি না। আসতে পারলেও ক্ষতি নেই। নতুন-মা মাথা নাড়িয়া বলিলেন, না বাবা, কেবল রেণুই তো নয়, তোমার কাকাবাবুও রয়েছেন যে। আমি কেবলই ভাবি ঐ নিরীহ শান্ত মানুষ না জানি একলা কত লাঞ্ছনা, কত উৎপীড়নই সহ্য করেছেন। বলিতে বলিতে র্তাহার চক্ষু সজল হইয়া উঠিল। রাখাল মনে মনে মামাবাবু হেমন্তকুমারের চাকার মতো মন্ত মুখখানা স্মরণ করিয়া নীরব হইয়া রহিল । এ কাজ যে সহজে হয় নাই তাহা নিশ্চয় । নতুন-মা বলিতে লাগিলেন, এ বিয়ে স্থগিত রইলো তিনি এইমাত্র লিখেচোন। কিন্তু কিছুদিনের জন্যে না চিরদিনের জন্যে সে তো এখনো জানতে পারা যায়নি। রাজু। রাখাল বলিয়া উঠিল, চিরদিনের জন্যে মা, চিরদিনের জন্যে। ঐ পাগলদের ঘরে আপনার রেণু কখনো পড়বেনা। আপনি নিশ্চিন্ত হোন। নতুন-মা বলিলেন, ভগবান তাই করুন। কিন্তু ঐ দুর্বল মানুষটির