পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
দ্বিতীয় দৃশ্য

বুলিগুলো সর্ব্বাঙ্গে বিঁধতে থাকে। সেই দৈত্যটার হাত থেকে বাজকন্যা উদ্ধাব করি কী উপায়ে?

 বিধুমুখী। আমি মেয়েমানুষ, মেয়ের মন বুঝতে পারি—মনে মনে সে তোকে ভালোবাসে।

 সতীশ। সে আমি জানিনে। কিন্তু বরুণ নন্দীব সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে প্রাণ বেরিয়ে গেল। বাবা একটু দয়া ক’রলেই কোনো ভাবনা ছিলো না। কিন্তু—

 বিধুমুখী। তোর কী চাই বল না।

 সতীশ। ভালো বিলিতি সুট। চাঁদনীর কাপড় প’র্‌লেই ভরসা কমে যায়, নন্দীর মতো করে’ সজোরে নলিনীর সঙ্গে কথাই কইতে পারিনে। বাড়িসুদ্ধ সব্বাই আমার দিকে এমন ক’রে তাকায় যেন আমার গায়ে কাপডই নেই, আছে নর্দ্দমার পাঁক।

 বিধুমুখী। আমি তোর কাপড়ের দুর্দ্দশা তোর মাসীকে আভাসে জানিয়ে রেখেছি। আজ এখনই তাঁর আসবার কথা। আজই হয় তো একটা কিনারা হ’য়ে যাবে।

 সতীশ। ঐ যে মেসোমশায়কে নিয়েই তিনি আস্‌চেন না, যেমন করে’ পাবো আজই যেন—কিন্তু মা, সেই গুড়গুড়ি—বাবা যদি জান্‌তে পারেন, মেরে ফেল্‌বেন।

 বিধুমুখী। আমি বলি কি— কোনো ছুতোয় সেই নেকলেস্‌টা যদি নলিনীর কাছ থেকে—

 সতীশ। সে কথাও ভেবেছি। তা হ’লেই আমার লজ্জা পূরো হয়। এক একবার মনে করি, সংসারে যত মুস্কিল, সব আমারই! বরুণ নন্দীর বাপ কি কোনো কালে ছিলো না? যে রকম দেখ্‌চি,

১৬]