নলিনী। ও কী হ’লো?
সতীশ। ভেবেছিলুম, ওর দাম আছে, ওর কোন দাম নেই।
নলিনী। (তুলিয়া লইয়া) তুমি রাগই করো আর যাই করো, আমার যা ব’লবার, তোমাকে ব’লবোই। আমি তো তোমাকে ছেলেবেলা থেকেই জানি, আমার কাছে ভাঙিয়ো না। সত্য করে’ বলো, তোমার কি অনেক টাকা ধার হয় নি?
সতীশ। (চমকিয়া উঠিযা) কে ব’ললে ধার হ’য়েছে? কে ব’ললে তোমাকে? এক জন কেউ আছে, সে লাগালাগি ক’রচে। তার নাম বলো, আমি তাকে—
নলিনী। আজ তোমার কী হ’য়েছে বলো তো?
সতীশ। ব’লতেই হবে, তোমাকে কে ব’লেছে আমার ধারের কথা? আমি তাকে দেখে নিতে চাই।
নলিনী। কেউ বলে নি। আমি তোমাব মুখ দেখেই বুঝ্তে পারি। আমার জন্য তুমি এমন অন্যায় কেন ক’রচো?
সতীশ। সময়বিশেষে লোকবিশেষের জন্যে মানুষ প্রাণ দিতে ইচ্ছে করে, আজকালকার দিনে প্রাণ দেবার ভদ্র উপায় খুঁজে পাওয়া যায় না—অন্তত ধার করার দুঃখটুকু স্বীকার ক’র্বাব যে সুখ, তাও কি ভোগ ক’র্তে দেবে না? আমার পক্ষে যা মৃত্যুর চেয়েও দুঃসাধ্য, আমি তোমার জন্য তাই ক’রতে চাই নেলি, এ’কে যদি তুমি নন্দী সাহেবের নকল বলো, তবে আমার পক্ষে মর্মান্তিক হয়।
নলিনী। আচ্ছা, তোমার যা ক’র্বার, তা তো ক’রেচো—তোমার সেই ত্যাগ স্বীকার-টুকু আমি নিলেম-এখন এ জিনিষটা ফিরে নাও।