পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
চতুর্থ দৃশ্য

 হরেন। দাদা ফুলের তোড়া কেড়ে নিয়ে গেলো

 বিধু। আচ্ছা, সে আমি তার কাছ থেকে নিয়ে আস্‌চি! (হরেনের ক্রন্দন) এমন ছিঁচকাঁদুনে ছেলেও তো আমি কখনো দেখিনি। দিদি আদর দিয়ে ছেলেটির মাথা খাচ্চেন। যখন যেটি চায়, তখন সেটি তাকে দিতে হবে। দেখোনা, একেবাবে নবাবপুত্র! ছি ছি, নিজের ছেলেকে কি এমনি ক’রেই মাটি ক’র্‌তে হয়! (সতর্জ্জনে) খোকা, চুপ কর ব’ল্‌চি, ঐ হাম্‌দোবুড়ো আস্‌চে।

সুকুমারীর প্রবেশ

 সুকুমারী। বিধু, ও কি ও! আমার ছেলেকে কি এমনি করেই ভূতের ভয় দেখাতে হয়। আমি চাকর বাকরদের বারণ করে’ দিয়েচি, কেউ ওর কাছে ভূতের কথা ব’ল্‌তে সাহস করে না।—আর তুমি বুঝি মাসি হ’য়ে ওর এই উপকার ক’র্‌তে ব’সেচো! কেন বিধু, আমার বাছা তোমার কি অপরাধ ক’রেচে। ওকে তুমি দু’টি চক্ষে দেখ্‌তে পার না, তা আমি বেশ বুঝেচি! আমি বরাবর তোমার ছেলেকে পেটের ছেলের মতো মানুষ ক’র্‌লেম আর তুমি বুঝি আজ তারই শোধ নিতে এসেচো।

 বিধু। (সরোদনে) দিদি, এমন কথা বলো না। আমার কাছে সতীশ আর তোমার হরেনে প্রভেদ কি আছে!

 হরেন। মা, দাদা আমাকে মেরেচে!

 বিধু। ছি ছি খোকা, মিথ্যা ব’ল্‌তে নেই। দাদা তোর এখানে ছিলোই না, তা মার্‌বে কি করে’।

 হরেন। বাঃ—দাদা যে এইখানে বসে’ চিঠি লিখছিলো—তাতে ছিল ভয়ে আকার ভা, ল, ভাল।

৬০ ]