করিয়াছি, তাহা তাঁহার অনন্যসাধারণ প্রতিভাপ্রসন্ত হইলেও, মনে রাখিতে হইবে, সে প্রতিভা তাঁহার প্রগাঢ় দেশপ্রীতির প্রভাবেই পরিাচালিত হইয়াছিল। তাঁহার প্রবল সর্বদেশানরোগই যে তাঁহার বঙ্গদশনের(৩) স্রস্টা, এ কথা কে অস্বীকার করিবে ? “বঙ্গদশ্যন বলিতে বঙ্কিমচন্দ্র এবং বণ্ডিকমচন্দ্ৰ বলিতে ‘বঙ্গদশন’-এর কথা সম্ভবতঃই সমরণ-পথে উদিত হয়। “বঙ্গদর্শন’-এর প্রথম সংখ্যাতেই তিনি “ভারতকলঙ্ক’ শীর্ষক প্ৰবন্ধ লিখিয়া তাঁহার সবদেশবাসীকে বাঝাইয়া দেন যে, “মধ্যকালে যাহা ভারতকলঙ্ক বলিয়া মনে ধারণা করিয়াছ, ইতিহাসের সক্ষম অস্ত্ৰ লইয়া সেই কলঙ্ক ব্যবচ্ছেদ করিলে দেখিবে, তাহাই ভারতগৌরব।” “বঙ্গদশন” যখন প্রকাশিত হয়, তখন তাঁহার বয়স চৌত্ৰিশ বৎসর মাত্র। ভাবিলে বিস্মিত হইতে হয় যে, এত অলপ বয়সেই তিনি শিক্ষিত বাঙালীর উপদেশটার আসন গ্রহণ করিয়া তাঁহার “বঙ্গদশন” পত্রে এই উপদেশবাণী—“আমাদের ভরসা আছে। আমরা স্বয়ং নিগণি হইলেও রত্নপ্ৰসবিনীর সন্তান। সকলে সেই কথা মনে করিয়া জগতীতলে আপনার যোগ্য আসন গ্রহণ করিতে যত্ন কর।”—নানা প্রকারে প্রচার করিতে আরম্ভ করেন। തു বঙিকমচন্দ্র বাঙলা ও বাঙালীর গৌরব। তাঁহার গৌরবে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও আজ গাব ও গৌরব প্রকাশের অধিকারী। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন সব প্রথম এন্ট্রান্স ও বি. এ. পরীক্ষা গহীত হয়, তখন এই উভয় পরীক্ষারই উত্তীণ ছাত্র তালিকায় তাঁহার নাম আমরা দেখিতে পাই। তারপর ১৮৮৫ খ্রীস্টাবদ হইতে আরম্ভ করিয়া যতকাল তিনি জীবিত ছিলেন, ততকাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যপদে নিযক্ত থাকিয়া ইহার কল্যাণসাধনের জন্য যত্ন ও শ্রম করিয়া গিয়াছেন। তাই তাঁহার তৈলচিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্ষে সাদরে স্থাপিত রহিয়াছে। তাই তাঁহার শততম বাষিকী উপলক্ষে বাঙলার ছাত্র সম্প্রদায়কে উপহার দিবার উদ্দেশ্যেই কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে আজ এই ‘বঙিকম পরিচয়” প্রকাশিত হইল। বঙ্কিমচন্দ্রের রচনা-সমদ্র মন্থন করিয়া ছাত্ৰগণের (৩) বঙ্গদর্শন-বণ্ডিকম-সম্পাদিত মাসিকপত্র। প্রথম প্রকাশকাল ১৮৭২ খ্ৰীঃ। 为之
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/১৮
অবয়ব