সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রীতি-স্থাপন এই সাহিত্য সম্মেলনের উদ্দেশ্য হইতে পারে না। এই সাহিত্য-সভা কেবলমাত্র বঙ্গসাহিত্যসেবীদের সভা নহে। নিজেরা লেখক না হইয়াও যাঁহারা সাহিত্যের ভিতর দিয়া জাতীয়-সমস্যা সমাধানের জন্য, জনগণের আশা, আকাঙক্ষা, ভাবকে রপায়িত দেখিতে চান, তাঁহারাও এখানে উপস্থিত আছেন। সকলে মিলিয়া বাঙালী জাতির জটিলতাপািণ সমস্যাকে আজ সত্বাধীন ভারতের সকল প্রদেশের অধিবাসীদের অন্তরে জাগ্রত করিয়া তুলিতে হইবে। অধিকন্তু বিভিন্ন প্রদেশ হইতে অন্য ভাষাভাষী সাহিত্যানরাগী অনেকেই এখানে সমবেত হইয়াছেন। তাঁহারাও উপলব্ধি করিবেন-ভিন্ন ভিন্ন ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্যের মধ্যে ঐক্য স্থাপনের একান্ত প্রয়োজনীয়তা আছে। সেই ঐক্য-নীতিকে ভিত্তি করিয়া যাহাতে সব প্রদেশের ভাষার ও ভাবের সংগঠনকায নিবাহ হয়, তাহার উপায় নিধারণ করা এই সম্মেমলনের এক প্রধান কতব্য হইবে। এই প্রকার বিভিন্নমখী চিন্তাধারার সংযোগে ভারতের বিরাট সাংস্কৃতিক ঐক্য রক্ষিত ও পরিবর্ধিত হইবে। ভাষা হইতেছে ভাব ও সংস্কৃতির বাহন। এই বাহন যে দেশের যত শক্তিশালী, সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সেই দেশ তত বীয ও ঐশ্বযশালী। দেশের অতীত, বতর্তমান ও ভবিষ্যৎকে শক্তিশালী ভাষাই একসত্ৰে গাঁথিয়া রাখিতে পারে। ভাষার মকুরে আমরা অতীতকে প্রতিবিম্বিত দেখি, বত মানকে কম মােখর করিয়া তুলি এবং ভবিষ্যতের ইঙ্গিত পাইয়া উন্নত মস্তকে লক্ষ্যপথে অগ্রসর হই। সেই লক্ষ্যপথে ভাষা ও সাহিত্যই যাগে যাগে, দেশে দেশে সভ্যতার পরিব্ৰাজকদের পরিচালিত করে। ইহা শাশ্বত অভ্রান্ত সত্য। ভারতবষে হিমালয় হইতে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত বহতর ভাষা প্রচলিত। প্রধান প্রধান সকল ভাষার মধ্যেই অলপবিস্তর কিছ না কিছ ভাব-সষমা সঞ্চিত আছে। আধনিক ভারতীয় ভাষাগলির মধ্যে আমাদের মাতৃভাষা বাঙলা, বিশিস্ট সাহিত্যগৌরব ও মযাদা লাভ করিয়াছে। ইহা সকলেই সবীকার করেন। দেড়শত বৎসর ধরিয়া সাহিত্য-সাধকদের তপস্যায় ইহা সম্ভব হইয়াছে। তাঁহাদেরই ঐকান্তিক নিৰ্ম্মঠা, সাধনা ও তপস্যার প্রভাবে সারা ভারতে এক অভিনব জাগরণ হইয়াছিল। বাঙলায় যে নািতন ভাববন্যা ও কম ধারার প্রবাহ ছটিয়াছিল, তাহা বাঙালী নিজের © \ታ
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৬২
অবয়ব