স্বাধীনতা উড়িষ্যা বহদিন রক্ষা করিয়াছিল। শৌৰ্য বীয্যের ক্ষেত্রে ইহা কম শ্লাঘার কথা নহে। এই সকল কারণে আজ আমরা এইস্থানে সম্মিলিত হইয়া গৌরব অনভব করিতেছি। বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের যখন জন্ম হয়, সে সময়টিকে আমাদের মধ্যে অনেকেই বাঙলার একটা দঃসময় বলিয়া উল্লেখ করিয়া থাকেন। বিশেষ অন্যায় হইবে না। বঙ্গদেশ তখন বিদেশী শাসকদের কােটনৈতিক চালে দ্বিখন্ডিত হইলেও সে সময়ে বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন উপলক্ষে বরিশালের নিমন্ত্রণাপত্রে ঘোষণা করা হইয়াছিল যে, “সভার উদ্দেশ্য সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রীতি-স্থাপন ও মাতৃভাষার উন্নতিসাধন”। আজ এইরােপ আমন্ত্রণপত্র ঢাকা বা বরিশাল হইতে আসিবার শীঘ্ৰ কোন সম্ভাবনা নাই। ইংরাজ শাসক জোর করিয়া যে বাঙলাকে সে দিন ভাঙিয়া খন্ডিত করিয়াছিলেন, বাঙালী আপন শক্তিতেই সেই খন্ডিত বাঙলাকে আবার জোড়া লাগাইয়াছিল। আজ আবার যখন নিয়তির পরিহাসে সেই জোড়া বাঙলা ভাঙিয়াছে, তাহা কি পনরায় বাঙালী হিন্দ ও মসলমানের সমবেত শক্তিতে জোড়া লাগিবে ? এ প্রশন অনেকেরই মনে জাগিতেছে। বঙিকমচন্দ্র একস্থানে বলিয়াছেন—“যে রাজ্য পরজাতি পীড়ন শন্য, তাহা সবাধীন” ভারতের স্বাধীনতার জন্য বাঙলার যে বহৎ অংশকে বলি দিতে হইয়াছে, সেই অংশের বাঙালী অধিবাসীরা পরজাতির পীড়নের তীৱ জবালা আজ মামে মামে অনভব করিতেছে। আর স্বাধীন ভারতের অন্তভুক্ত ক্ষদ্রাংশ পশ্চিম বাঙলার মধ্যে যাহারা আছে, তাহারাও আজ নিরাশার নিঃশ্বাস ফেলিয়া ভাবিতেছে—“যে রাজ্য সবজাতি-সহানভূতি-শন্য, তাহা কি সবাধীন ? যে রাজ্য তোষণনীতির নিমিত্ত সবজাতির দঃখ-দদশার প্রতি উদাসীন, সে রাজ্যকে কি সবাধীন বলিব ? বাঙালীর জীবন আজ মহা বিপন্ন। এমন ভয়াবহ বিপৰ্যায়ের মখে বাঙালী জাতিকে আর কখনও পড়িতে হয় নাই। এই বিপর্যায়ের হাত হইতে বাঙালীকে রক্ষা করিতে হইবে। বাঙালীর অস্তিত্ব যাহাতে বিলপ্ত হইয়া না যায়, তাহার জন্য কত ব্য-পথ নিৰ্ণয় করিতে হইবে } সেই কারণেই আমি বলিতে চাই—কেবলমাত্র মাতৃভাষার উন্নতিসাধন ও GG
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৬১
অবয়ব