ভারতের অন্যান্য প্রদেশ হইতে বাঙলার একটা সর্বতন্ত্র বৈশিষট্য আছে। বাঙলার সভ্যতা, কৃন্টি, আচার-ব্যবহার, রীতিনীতি ও ধম, সকল ক্ষেত্রেই একটা সবাতন্ত্র্যবোধ ও নিজস্বতা চিরকালই আছে। সাধারণতঃ সংকীর্ণতা বা সবার্থপরতাকে বাঙলাদেশ আমল দেয় নাই। এক সমন্বয় পদ্ধতিতে সে আপনার এই বৈশিষট্যকে গড়িয়া তুলিয়াছে। ভাব, কৃলিট ও চিন্তার ক্ষেত্রেও এই সমন্বয় পদ্ধতি বাঙলার সাহিত্যকে সেই কারণে সব প্রকার সংকীর্ণ পরিধির উধেব উঠিতে সহায়তা করিয়াছে। ইংরাজ যখন বণিকের মানদন্ড হাতে লইয়া আসিয়া এদেশে রাজদন্ড অধিকার করিয়া বসিল, তখন সব প্রথম বাংলার সহিত ইংরাজী সভ্যতা, ভাবধারা ও চিন্তাজগতের সংঘাত ঘটিয়া গেল। চারিদিকে এক নব জাগরণের সাড়া পড়িয়া গেল। ইংরাজী সাহিত্য, ইতিহাস, দশন ও বিজ্ঞান প্রভৃতি বাঙালীর মননশীলতাকে যেমন উদ্বদ্ধ করিয়া তুলিল তেমনি দেশাত্মবোধের অভিমন্ত্রও তাহার বকে এক আলোড়নের সন্টি করিল। কিন্তু, বাঙালী আপন ঘরেই এই নাতন আলোকের দাঁতিকে ধরিয়া রাখে নাই। আসমদ্র হিমাচল ভারতের প্রদেশে প্রদেশে তাহার দিব্যচ্ছটা পরিব্যাপ্ত করিয়া দিবার সংযোগ সে গ্রহণ করিয়াছিল। সংকীর্ণ মনোভাব বাঙালীর কোনদিন ছিল না, পরকে সে আপন করিয়াছে, দরকে নিকট করিয়াছে এবং বাহিরকে ঘর করিয়াছে। তাহার সাহিত্যে বহত্তর ভারতের রােপ সে ফটাইয়া তুলিয়াছে। বৈষ্ণব গীতি-কবিতার যােগ হইতে আরম্ভ করিয়া বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত যাহা কিছ ভাষা অলংকার ও ছন্দে বাঙালী গাঁথিয়া তুলিয়াছে, তাহার সব কিছই সে বহত্তর ভারতের ক্ষেত্রে ছড়াইয়া দিতে চাহিয়াছে। প্রাদেশিকতার বিষবাহুপ আজ কোথাও কোথাও ধর্মায়িত হইতে দেখা দ্বারা এই আত্মধবংসী বিষের বিনাশ সাধন আশ প্রয়োজন হইয়া পড়িয়াছে। এই কায্যের ভার সব ভারতীয় কবি ও সাহিত্যিকদেরই গ্রহণ করিতে হইবে। ভারতের বিভিন্ন ভাষাসমহের প্রত্যেকটির মধ্যেই ভারতীয় সংস্কৃতির বহধা রূপ ছাড়াইয়া আছে। ভারতের কবি, সাধক ও ভাবকদের অন্তরের অপবর্ণ ভােবরাজি সাহিত্যের মধ্য দিয়াই নানাভাবে Gy
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৬৪
অবয়ব